গাউসুল আযম হযরত আবদুল আযিয খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি


মাওলানা আ.ন.ম আহমদ রেজা নকশবন্দী
আল্লাহ যেমন মহান তার প্রিয় হাবিব হযরত মুহাম্মদ মােস্তফা। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও মহান। তিনি অত্যন্ত করুণা ও । দয়া করে যুগে যুগে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কৌশলে তার বান্দাদেরকে শিরক, কুফরী, বিদআত ও অনৈসলামিক কার্যকলাপ হতে রক্ষা করে সু পথে পরিচালিত করার জন্য অসংখ্য অলি পাঠিয়েছেন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন স্তর তথা গাউস কুতুব, আবদাল, আওতাদ, সালেক, মাজজুব হিসাবে ভাগ করেছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশ পীর মাশায়েখ ও আলেমদের মতে গাউস হলেন সবার উর্ধ্বে যিনি প্রভুর করুণা প্রাপ্ত হয়ে সমগ্র বিশে, বিভিন্ন স্তরে তারই আওতায় বিভিন্ন কিছু পরিচালিত করেন। এদের মধ্যে স্বীয় যুগের গাউস ছিলেন যুগের বায়েজীদ, পীরে পীরান, মাহবুবে রহমান, সুলতানুল আউলিয়া হযরত শাহ মাওলানা আবদুল আজিজ নকশবন্দী মুজাদ্দেদী খায়রী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি যাকে বর্তমান বিশ্বের পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম হযরত গাউসুল আযম খুলনবী হিসেবে জানেন ও বুঝেন। 

জন্ম ও বংশ পরিচিতি : 

মূলত: কারাে পক্ষে সম্ভব নয় শাহ আবদুল আযিয খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর জীবনী সম্পূর্ণ বর্ণনা করার । কারণ তিনি এমন এক মহান সত্ত্বা ও আদর্শের প্রতিনিধি যার সান্নিধ্য লাভ করে লক্ষ লক্ষ মানুষ অন্তরে প্রশান্তি লাভে ধন্য হতেন। যার বৈঠক কথা-বার্তা সুলতানুল আরেফীন হযরত বায়েজীদ বােস্তামীর মত অনূভুত হয় । যিনি আপন যুগের গাউস ছিলেন যা তাঁর সমকালীন পীর, মুফতি, মুহাদ্দিস ও যুগ শ্রেষ্ঠ আলেমদের ঘােষণা।

এ মহান পবিত্র স্বত্ত্বা হযরত গাউসুল আযম খুলনবী (রহ.) ১২৮২ বাংলায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের খুলনা জেলার সাতক্ষীরা থানার অন্তর্গত চাপরা গ্রামে সর্দার বংশে তার জন্ম গ্রহণ করনে যা হাজারাে পরিবার সমৃদ্ধ গ্রাম! তার সম্মানিত পূর্ব পুরুষগণ উক্ত গ্রামের অত্যন্ত বুজর্গ এবং নেতৃস্থানীয় লােক ছিলেন। তাকওয়া, শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে উক্ত গ্রাম সর্বজন স্বীকৃত। তাঁর সম্মানিত পিতা মরহুম আবদুল লতিফ (রহ.) উক্ত গ্রামের ন্যায় বিচারক, সমাজ সেবক, সৎ, দানবীর ও সর্বজন স্বীকৃত পরহেজগারী সর্দার ছিলেন। বিদ্যা বুদ্ধিতে তার সমতুল্য লােক উক্ত স্থানে অত্যন্ত বিরল । তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামায তাহাজ্জুদ পর্যন্ত সহজে কাযা করতেন না। তাঁর মাতা অত্যন্ত পরহেজগারী ছিলেন। সর্বদা ইবাদাতে দিনাতিপাত ও রাতাতিপাত করতেন। হযরত গাউসে খুলনবী (রহ.) প্রায়ই এরশাদ করতেন- আমার বুদ্ধির পর থেকে আমার আম্মাজান পাঁচ ওয়াক্ত নামায তাহাজ্জুদ, এশরাক, ছাশত নামায পর্যন্ত কখনও কায়া পড়িতে দেখি নাই এবং তিনি গর্ব করে বলতেন। | যে, আমার যা কিছু জুটেছে তা আমার আম্মাজানের দোয়া ও বরকতে। তাঁর পিতা মাতা উভয়ের মাযার শরীফ বর্তমান থানকাহ শরীফের পার্শ্বে অবস্থিত যা থেকে ফয়েজ ও বরকত সব সময় বিস্তৃত হচ্ছে।

শিক্ষা দীক্ষা ও প্রভূর সন্ধানে আগ্রহ :
 তিনি প্রাথমিক জ্ঞান নিজ ভূমিতে শেষ করেন। বিশেষ করে দরগাহ পুর, শাহাজাদ পুর সহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি নিজ দেশের জ্ঞানাহরণের পর পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় তালীন দ্বীনি শিক্ষা। | নিকেতন “কছুয়ে ছালার" নামক মাদ্রাসায় তশরিফ নিলেন।সে সময় মুর্শিদাবাদের উক্ত প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি সমগ্র দেশে | বিরাজমান ছিল। এক যুগ পর্যন্ত তথায় জ্ঞানার্জনে মশগুল। ছিলেন। একদিন মাদ্রাসার সম্মানিত আলেম ও শিক্ষক মন্ডলীগণ আউলিয়া কেরামের কাশফ কারামত বিশেষ করে | হযরত গাউসে জামান, মাহবুবে রহমান হযরত মাওলানা শাহ্ সুফি আবদুল্লাহ আবুল খায়ের দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কেরামত কাশফ স্তর ও জীবনী চরিত্র আলােচনা করছিলেন। তিনি (হযরত খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) এক পাশে | দাড়িয়ে একাগ্রচিত্তে নিরলস ভাবে শ্রবণে মশগুল রইলেন।
তাদের সেই আলােচনার প্রভাবে তার চিত্ত প্রভুর সন্ধানে প্রেমের তরঙ্গে ফুটে উঠল এবং তিনি মনে মনে ধারণা করলেন যে, এ রকম মুরশিদে কামেলের দরবারে আমার যাওয়া একান্ত প্রয়ােজন। যাতে ইলমে সকিনার সাথে সাথে ইলমে সিনা তথা ইলমে শরীয়তের সাথে ইলমে মারফত অর্জন করার সুযােগ হয়। তার পর তিনি ঘরে চলে আসেন। ঘরে কিছুদিন অবস্থান করার পর পথ খরচ নিয়ে অলি আল্লাহর সন্ধানে আগ্রহ উদ্দীপনা। নিয়ে ঘর থেকে বের হলেন। তিনি নিজ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য। বিভিন্ন শহরে বিশেষ করে কানুপুর, ছাহরণ পুর, শাহাজাহানপুর, মীরট সহ অন্যান্য জায়গায় তশরিফ নিলেন।। কিন্তু তিনি কোন জায়গায় আত্মার শান্তি পাননি। যেমন তৎকালীন প্রসিদ্ধ পীর শাহ দরগাহী রাহমাতুল্লাহি আলাহি এর গুণাগুণ ও প্রসিদ্ধতা শুনে তাঁর সান্নিধ্যার্জনের জন্য হাজির। হলেন। হযরত শাহ ছাহেব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার উপস্থিতির বিভিন্ন বিষয় শ্রবণ করলেন এবং তাকে সম্ভাষন জানালেন । হযরত শাহ ছাহেব রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার কথা শ্রবণ করে নিজ পানের বাটা হতে একটা গুলারী পান প্রদান করলেন এবং তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললেন আপনি


গাউসে দেহলভী হযরত শাহ মাওলানা আবুল খায়ের ফারুকী রাহমাতুল্লাহি আলাহি এর দরবারে তশরিফ নিন। আরো বলে দিলেন যে, এটা হযরত ছাহেব শাহ রাহমাতুল্লাহি আলাহি এর শেষ সময়। তথ্য হতে হযরত খুলনী রাহমাতুল্লাহি আলাহি সঠিক মুর্শিদের সন্ধানে দিল্লীতে রওনা হলেন। দিল্লিতে হযরত গাউসে দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহির দরবারের খানকাহ শরীফে পৌছলে খানকাহ শরীফের দারােয়ান বলেন যে, আপনার ভিতরে যাওয়ার কোন অনুমতি নেই। দরবারে প্রবেশ করা হতে তাকে বাঁধা প্রদান পূর্বক তাড়িয়ে দিলেন তিনি নয় ও ভদ্রতার সাথে ফিরে হযরত দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহির দরগাহে হাজিরের চেষ্টায় নিমগ্ন রইলেন, কিন্তু সক্ষম হলেন না। পরিশেষে তিনি অবগত হলেন যে, হযরত গাউসে দেহলভী অধিকাংশ সময় মাদরাসায়ে আবদুর রবের জামে মসজিদে জুমার নামায আদায় করেন এবং মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মহােদয় হযরত মাওলানা আবদুল আলী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরতের মুরিদ ও বিশিষ্ট খাদেম, তিনি মাদ্রাসায়ে আবদুর রবে প্রবেশ করে দ্বীনি শিক্ষা দীক্ষায় মশগুল রইলেন।
লেখা পড়ার ফাঁকে ফাঁকে খানকাহ শরীফে তশরীফ নিতেন। কিন্তু প্রত্যেক বারেই দারােয়ান ভিতরে প্রবেশের অনুমতি নেই, ভিতরে প্রবেশের অনুমতি নেই" বলে তাড়িয়ে দিতেন। কয়েক বার তিনি স্বীয় শিক্ষক হযরত মাওলানা আবদুল আলী রহমতুল্লাহি আলাইহি সাহেবকে হযরত শাহ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর পবিত্র হাতে মুরিদ হওয়ার কথা ব্যক্ত করেন। তার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকার কারণে স্বীয় শিক্ষকের দরবারে আশ্রয় নিলেন। প্রত্যুত্তরে হযরত মাওলানা সাহেব বললেন সাবধান ! এ রকম খেয়াল করােনা, কেননা বড় বীর পুরুষ বাহাদুর কাবুল বাসী পাঠান পর্যন্ত তার তাওয়াজুহ শরীফের জ্যোতি নিতে সাহস করেনা। তুমি তাে একজন ক্ষীণ দুর্বল বাঙালী তুমি কিভাবে তার জ্যোতি অর্জন করবে? সুতরাং তােমার মরে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। পরে হযরতের শিক্ষা গুরু এ রকম কিছু বলার পরও তার আকাঙ্ক্ষা, আগ্রহ, উদ্দীপনা, কোন অংশে কমেনি বরং আরও বৃদ্ধি পেল। সারাদিন সারারাত গাউসে দেহলভীর সাক্ষাত লাভের চিন্তায় বিভাের থাকতেন। এদিকে সময় ঘনিয়ে আসল । বােখারী শরীফের পাঠ দানের পালা শুরু হবে। আর উক্ত সবক দান অনুষ্ঠান, সম্পাদন করবেন হযরত গাউসুল আযম দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। এদিকে হযরত খুলনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মনে আনন্দের ঢেউ বইতে থাকে। কেননা হযরত মাওলানা আবদুল আলী সাহেবের একটি নিয়ম ছিল যে ছাত্রদেরকে বােখারী শরীফ পাঠ। দান অনুষ্ঠান হযরতে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাধ্যমে শুরু করতে । একদিন জুমার নামাযের পর হযরত শাহ সাহেব হযরত গাউসে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি কে মাদ্রাসায় দাওয়াত দিলেন। তিনি তাশরীফ আনলে ছাত্রবৃন্দকে ডেকে বােখারী শরীফ শুরু করিয়ে দিলেন এবং অত্যন্ত গর্ব | আনন্দ, প্রফুনুচিত্তে বললেন (ইন্নামা আল আমালুবিন নিয়তি ওয়া ইন্না ইন্নামা লেইম রেইন মানাওয়া ফামান কানাত হিজবাতুহু ইলাল্লাহে ওয়া রাসুলিহী ফাহিজরাতুহু ইলাল্লাহে ওয়া রাসুলিহী ওয়া মান কানাত হিজরাতুহু ইলাদ দুনিয়া ইয়ুছিবুহা আউ ইমরাতিন ইয়া তা জাউয়া জুহা ফাি হিজরাতুহু মা হাযারা ইলাইহে) এই হাদিস খানা আমার দাদা বর্ণনা করেছেন। যেহেতু উক্ত হাদিস খানা হযরত ওমর ফারুক রদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করছেন। কয়েকঘন্টা যাবত তিনি উক্ত হাদিস শরীফের অত্যন্ত প্রাঞ্জল অতুলনীয় মাধুর্য সম্পন্ন অসীম চিত্তাকর্যক তকরীর পেশ করলেন। তারপর ছাত্রবৃন্দ তাবারুক অর্জনের জন্য তাঁর সাথে হাত মোসাফাহ করলেন। করমর্দন কালে হযরত  গাউসে খুলনী রহমতুল্লাহি আলাইহি হাত একটু চেপে ধরে ঝাড়া দিলেন হাতে হাতে ফয়েজ বিকিরণ হওয়ার প্রভাবে তাঁর সান্নিধ্যর্জনের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পেল। নিয়মিত খানকা শরীফে যাওয়া শুরু করল। কিন্তু হযরতের সামনে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি জুটছেনা। পরিশেষে তাঁর আগ্রহ, উদ্দীপনা এত তীব্রতর হল যে, যার অন্ত নেই তখন এক দিন জুমার নামায আদায়ের পর হযরত রদি উদ্দিন মােহাম্মদ বাকি বিল্লাহ রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাযার শরীকে হাজির হলেন। তাঁর পবিত্র মাজার শরীফে গিয়ে সালাম পেশ করার পর হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি এর দ্বারে হাজির হয়ে আবেদন পেশ করলেন হযরত গাউসে খুলনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি আমাকে অত্যন্ত স্নেহ, দয়া, করুনা করলেন এবং শান্তনা দিলেন সেখানে তিনি আমাকে গাউছে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি সাথে শুধু মােসাফাহা নয় আলিঙ্গই করিয়ে দিলেন। শেষ পরিণাম ইহাই যে, হযরত ফানাফিল্লাহ বাকিবিল্লাহ রহমতুহি আলাইহ এর দোয়ার বদৌলতে দ্বিতীয় বার খানকাহ শরীফে যাওয়ার পর খানকাহ শরীফে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। যখন হযরত গাউসে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর বরকতময় দরবারে পৌছলেন তখন হত দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্ত দয়া মুহাব্বত সহকারে বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ উপস্থিতির উদ্দেশ্য জেনে নিলেন। তিনি বললেন আমি শুধু আপনার গােলামীর সৌভাগ্য অর্জনের জন্য উপস্থিত হলাম। ইহা শুনে হযরত দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্ত আনন্দিত হলেন এবং বায়াত গ্রহণ করার মাধ্যমে সৌভাগ্যের পরম শিখরে আরােহন করলেন আর বললেন তুমি প্রতিদিন সকাল বিকাল খানকাহ শরীফে এসে তরিকতের অজিফা আদায় কর।

 হযরত গাউসে খুলনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন যখন আমি দ্বিতীয় দিন খানকা শরীফে হাজির হলাম দেখতে পেলাম . হুজুরের অনেক খাদেমগন  স্ব-স্ব স্বপ্নের বর্ণনা দিচ্ছেন। আমিও বললাম হুজুর গত রাতে আমিও একটি স্বপ্ন দেখেছি। হযরত গাউছে দেহলভী আমার প্রতি দৃষ্টিদান পূর্বক বললেন তুমি কি দেখেছ?  বর্ণনা কর? তখন আমি বললাম এই ফকির স্বপ্ন দেখলেন যে, আপনি আমাকে তাওয়াহ প্রদান করছেন। আর - আমি আল্লাহ তায়ালার স্বত্বার জ্যোতি এর মধ্যে ফানা হয়ে যাচ্ছি। হযরত কেবলা রহমতুল্লাহি আলাইহ বললেন, বাহ-বাহা কেমন উত্তম স্বপ্ন, আবার বর্ণনা করুন, পুনরায় বিবৃতি প্রদান করলাম হযরত কেবল রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় আরেক খাদেমকে উদ্দেশ্য করে বললেন দেখুন দেখুন এই মৌলভী আবদুল আযিয় বাংগালী কেমন উত্তম স্বপ্ন দেখলেন যে, বার বার শুনতে আগ্রহ জন্মে। আর তােমরা এমন স্বপ্ন বর্ণনা কর যে, যার মাথা ও নেই লেজও নেই। হযরত এতটুকু বলতে নাবুলতে সকুল খাদেম ভক্তদের অন্তরে খােদা প্রেমে বিভাের হয়ে সবার চেহেরায় আগ্রহ উদ্দীপনা ফুটে উঠে ওয়াজদ এবং জজবার প্রকাশ ঘটল সকলে অনুভতি হারিয়ে ফেলল । ইহা হতে স্পষ্টভাবে অনুমান করা যাচ্ছে যে, উক্ত বাগানের ফলফুলের মর্যাদা কতটুকু। যেহেতু বাংলায় একটি প্রবাদ আছে বৃক্ষ তােমার নাম কি ফলে পরিচয়। কিছু দিন অতিক্রম করার পর হযরত গাউসে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে খেলাফত এবং তরিকতের পূর্ণ মুকুট সাধারণভাবে পরিয়ে দিলেন । প্রাথমিক ভাবে এ নিয়ম ছিল যে, ছয়মাস খানকা শরীফে বাকী সময় নিজ দেশে কাটাতে হত । 
মুরিদের সংখ্যা :
যদিও বর্তমানে উক্ত তরিকার মুরিদের সংখ্যা কোটি পর্যায়ে পৌঁছেছে কিন্তু গাউসে খুলনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মুরিদানের সংখ্যা দুই লক্ষের উর্ধ্বে ছিল। কেননা পূর্ব বাংলায় ও পশ্চিম বাংলায় এমন কোন জেলা নেই যেখানে তার মুরিদান নেই। অনুরূপ পূর্ব দিগন্তে বার্মা, আকইয়াব, রেঙ্গুন, সানদামা, মিওরখীল, ছুরি ভাংক, কিপর উপদ্বীপসহ অন্যান্য জায়গায় যথেষ্ট মুরিদান ছিল। এদিকে পশ্চিমে বিহার, পাটনা, মুংগীর, বেনারস, আজমগড়, এলাহাবাদ, ফতেহপুর, কানপুর, দিল্লী, সেরহিন্দ শরীফ, বছি, কাবুল, কান্দাহার, বােখারা, সিঙ্গ করাচি সহ বিভিন্ন দেশে অসংখ্য মুরিদান আছে। সেরহিন্দ শরীফে তৎকালীন সাজ্জাদানশীন খলিফা শাহ মুহাম্মদ মকবুল আহম্মদ শাহ সাহেব তাঁরই ভক্ত ও মুরিদান। তাঁর এত অধিক মুরিদভক্ত অনুরক্ত থাকার পরও তার কাছে কোন তালিকা ছিলনা যেমন, তাঁর এমন কতগুলাে মুরিদ যারা বায়াত গ্রহণ করার পর সরাসারি তার সাথে দশবিশ বছর পর মাত্র একবারই সাক্ষাত লাভে ধন্য হয়েছেন। তাঁর আধ্যাত্মিক শক্তি ছাড়াও জাহেরী স্মৃতি শক্তিও এত প্রখর ছিল যে, কোন কোন মুরিদ দশ-বিশ বছর পর সাক্ষাত হলেও তিনি বলতেন তুমি অমুকের পুত্র অমুক না; তুমি অমুক গ্রামের অধিবাসী ? তুমি অমুক জায়গায় আমার হাতে মুরিদ হয়েছিলেনা? এভাবে প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তরে হ্যা ব্যতিত না পাওয়া যেত না। এটা হল তাঁর স্মৃতি শক্তির প্রখরতার ক্ষুদ্র দৃষ্টান্ত।
 ঈদে মিলাদুন্নবীতে মহানবী (দ.) এর দীদার : 
হযরত গাউসে দেহলভী শাহ সুফি সৈয়দ মুজাদ্দেদী। রাহমাতুল্লাহি আলাইহি রবিউল আউয়াল শরীফের বার তারিখ মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা মাহফিলের আয়ােজন করতেন এবং নিজেই মিলাদ শরীফ পাঠ করতেন। একদা তার। | শেষ বয়সে প্রত্যেক বৎসর অনুযায়ী রবিউল আউয়াল শরীফের মাহফিলের এন্তেজাম এমনভাবে করলেন যে, যাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শান, মান, ইজ্জত, সম্মান। অন্যান্য বৎসরের তুলনায় শত শত গুণ বৃদ্ধি পায়। হারিকেন, মেন্টল বাতি, ফানুস, মােমবাতি, বিভিন্ন রং এর কাঠ ফুল দ্বারা এবং সবুজ পত্র পল্লবে সজ্জিত করলেন গােটা মাহফিল ।, অর্ধ কোটির মত নবী প্রেমিক ভাগ্যবান শ্রোতা মাহফিলে হাজির হলেন। হযরত গাউসে দেহলভী স্বয়ং নিজেই মাহফিলে মিলাদ পাঠ করতেছেন মাঝখানে হযরত গাউসে খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি জজবার হালতে একাকি দাঁড়িয়ে গেলেন। আর অনুভূতিহীন অবস্থায় চিৎকার করে বলতে লাগলেন যে, দেখুন! দেখুন! আমাদের হযরতকে জনাব রাসুল মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কোলে তুলে নিয়ে বসালেন, তখন হযরত গাওছে দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলতে লাগলেন, দেখ . মৌলভী আবদুল আজিজ কি বলতেছে? শুধু এতটুকু বলে তিনি চুপ রইলেন। তারপর চতুর্দিকে একটু তাকালেন। এ মুহুর্তে মাহফিলের সকল বাতি, মেন্টল বাতি, মােমবাতি, ফানুস বাতি ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক বাতি নিভে গেল। কিছু ফেটে গেল আর কিছু ভেঙ্গে মাটিতে পরে গেল। পরক্ষণেই তিনি পুনরায় মিলাদ শরীফ পাঠ শুরু করেন। কেয়াম সহকারে অত্যন্ত আগ্রহ উদ্দীপনার সাথে সালাত ও সালাম পাঠ করলেন যা সম্মানিত | শ্রোতাদের জন্য বিশেষ রহমত ও ফয়েজ বরকত হাসিলের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াল। উক্ত মাহফিলের পঞ্চম দিনও সপ্তম দিন হযরত গাউসে খুলনবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এরশাদ করলেন| এখনও পর্যন্ত মাহফিলের বরকত ও ফয়েজে ডুবে আছি। উহার নিষ্টতার আনন্দ অনুভূত হওয়ার কারণে ঘুম, ক্ষুধা ও পিপাসা আসতেছে না। আজ সাতদিন গত হল গােসল পর্যন্ত করি নাই তখন গরমের মৌসুম ছিল।

কাশফ ও কারামত : 
তার আরেকটি বিশেষ স্বভাব ছিল যে, কাশফ ও কারামতকে | কোন গুরুত্ব প্রদান করিতেন না এবং বলতেন যে,
কাশফ ও কারামতের কোন বাস্তবতা নেই । পীরের জন্য মৌলিক বিষয় ইস্তেকামত। এ জায়গায় তিনি হযরত
শাহসুফি গােলাম আলী দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর কবিতাখানি পাঠ করতেন ।

 মা বরায়ে ইস্তে কামত আমদিম।
নেবরায়ে কাশফ ও কারামত আমদিম। 
অর্থ : আমি তরিকতে দৃঢ়তা থাকার জন্য এসেছি, কাশফ ও কারামত প্রদর্শনের জন্য আসিনি। 

   তিনি অধিকাংশ সময় বলতেন আগুনের ভিতর দিয়ে অতিক্রম | কারীও বাতাসে উড়ন্ত ব্যক্তিকে আমি পীর
বলিনা। বরং যিনি মৃত কূলবকে জীবিত করতে পারেন সত্যিকার অর্থে তাকেই আমি পীর বলি ও বুঝি। যেমন :
হযরত গাউসুল আযম  খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর একজন নিম্নস্তরের মুরিদ, ভক্ত ও গােলামের মধ্যেও
এ গুণ সর্বদা বিরাজ করত। আমার | বিশ্বাসও নিশ্চিত ধারণা হল যে, তার কোন সুদৃষ্টি সম্পন্ন নিম্নস্তরের গােলামের
প্রতি ও দৃষ্টিপাত করা হয় তবে তাকেও মুরদা দিল পাওয়া যাবে না। তিনি কারামত ও কাশফকে মোটেও পছন্দ করতেন না। একদা আলোচনা সাপেক্ষে তার শিষ্য মৌলভী জহির আহম্মদ ছাহেবকে সম্বোধন করে বলেন। ‍'মৌলভী জহির আহম্মদ! যদি আমি পীর মুরিদের মাঝে কাশফ কারামত দেখাতাম তাহলে বঙ্গ রাজ্যে কোন হিন্দু থাকত না। বলতে গেলে এটাই বলা যায় যে, তাঁর চাল-চলন, কথা-বার্তা, কর্মকান্ড ও বুদ্ধি হয়রান কারী কারামত সমূহের দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু তিনি তা এড়িয়ে চলতেন। আর জ্ঞানবান বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তিরা তাতে কোন  কিছু জেনেও বুঝে নিতেন। মাঝে মধ্যে জোর পূর্বক ধমক দিয়ে বা নির্দেশ দিয়ে তিনি তা স্পষ্ট ভাষায় কর্কশ বাক্যের মাধ্যমে ডেকে রাখতেন। দর্শন করীরা যাতে সহজে বুঝে যায় এটা সাধারণ মূল্যহীন। এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব যার কারামতে কোন সীমা নেই। যদি তাঁর জীবনের সামান্য কারামতও সংরক্ষণ করা হত। তাহলে বিরাট একটা দপ্তরে পরিণত হত। এরপরও সকল ভক্তবৃন্দ বোধ্যমগ হওয়ার জন্য এবং বরকত হাসিলের প্রত্যেয় করিপয় কারামত বর্ণনা করা হল।


দ্বীন প্রচারে ধায় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা :

হযরত গাউসুল আযম খুলনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি দিল্লী হযরত হতে শরীয়ত ও তরীকতের খেলাফত লাভে ধন্য
হওয়ার পর হয় গ্রামে এসে নিজেই আল্লাহর পথে মানুষদেরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য পবিত্র কোরআনে করিমের
শিক্ষা দিতেন। শিক্ষিত মানুষদেরকে তিনি মসজিদে বসে ইসলামী শরীয়তের বিভিন্ন মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষা
দিতেন। যুগ শ্রেষ্ঠ আলেম তৈরী করার জন্য  তিনি “দরসে নেযামী” নামক এমন একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরী করেন।
সেখানে তিনি নিজেই উর্দু ফার্সী, নাহু, ছরফ, আদব, মানতিক, ফিকাহ, উসূলে ফিকাহ ও ইলমে কেরাত সহ
কোরআন হাদিসের জ্ঞান দান করতেন। যারা মেধাবী ছাত্র ছিল তাদেরকে তিনি নিজ খরচে চট্টগ্রাম, ঢাকা,
কলকাতা ও ভারতের বিভিন্ন সুন্নী আক্বিদার দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতেন। ছাত্ররা বিভিন্ন দেশ হতে লেখা পড়া
করে সত্যিকারার্থে নায়েবে রাসুল হলে তখনই তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দিলেন । কিন্তু উক্ত দরসে নেযামী
কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার পূর্বেই মহান আল্লাহ তাকে স্থায়ী জগতের বাসিন্দা হওয়ার আহবান করলে তিনি উক্ত
আহবানের সাড়া দেন। আল্লাহ তাকে জান্নাতের শ্রেষ্ঠ মকাম দান করুন ।
পরবর্তীতে তার স্বীয় বড় সাহেবজাদা কুতুবুল আওলিয়া হযরত মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রাহমাতুল্লাহি
আলাইহি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৫৭ সালে ২৮ শে ফেব্রুয়ারী মাদরাসায়ে খাইরিয়া আজিজিয়া” নামে এক মহান
দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন। যা খুলনা বিভািগে অত্যন্ত সুনিপুনভাবে ইলমে দ্বীনের খেদমত করে যাচ্ছে।
হাজার হাজার আলেম, হাফেজে কুরআন, কৃারী বের হয়ে কোরআন হাদীসের অফুরন্ত খেদমত  আজও পর্যন্ত
করে যাচ্ছেন।
ছেলে সন্তান:
 হযরত শাহ সুফী মাওলানা মােহাম্মদ আবদুল আযিয় খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি সাত ছেলে দুই কন্যার জনক।
তার প্রত্যেক ছেলে যেন আদর্শের আকাশে চির উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি প্রত্যেক ছেলেকে লেখা-পড়ায়, শিক্ষা-দীক্ষায়,
ভদ্রতায়, আদবকায়দায়, ভাষা-সাহিত্যে ও দৈনন্দিন জীবনে ধর্মীয় জ্ঞান সহ প্রত্যেক বিষয়ে যুগােপযােগী করে তুলেছিলেন।
কয়েক সাহেবজাদাকে ইলমে শরীয়ত ও তরিকতের যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ও অলির স্তরে উত্তীর্ণ করেন। যারা মৌলিকভাবে
মা-দরজাত অলি ছিলেন, বিশেষ করে হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আবদুর রহিম ও মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রহমতুল্লাহি
আলাইহি এদের মধ্যে অন্যতম। নিম্নে হুজুর রহমতুল্লাহি আলাইহির সাহেবজাদা গণের নাম উল্লেখ করা হল ঃ 

১। কুতুবুল আউলিয়া হযরত শাহসুফী মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২। পীরজাদা মােহাম্মদ আব্দুল কাদের রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩। পীরজাদা মােহাম্মদ ইয়াহইয়া রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪। ইমামুল আউলিয়া হযরত শাহসুফী মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম শাহ্ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৫। পীরজাদা মােহাম্মদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৬। পীরে তুরিকত পীরজাদা শাহসুফী হযরত মাওলানা মােহাম্মদ ছাদেক রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৭। পীরজাদা প্রকৌশলী মােহাম্মদ যােবাইর সাহেব। 


মুর্দাকে জিন্দা করা :
 মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন সরদার বাকাড়ায় চব্বিশ পরগনা জেলার অধিবাসী। তিনি হযরত গাউসে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর বিশিষ্ট খাদেম ছিলেন। প্রায় এক যুগ ধরে তিনি হযরত গাউসে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর খেদমতে ছিলেন। তিনি বলেন একসময় আমি হযরত গাউসে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর খেদমতে ছিলেন। তিনি বলেন একসময় আমি হযরত গাউসে আযম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি কে আমার বাড়ীতে দাওয়াত প্রদান পূর্বক মেহমান করলাম।

 মেজবানসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের এন্তেজাম করলাম। হঠাৎ সকাল আট কিংবা নয়টা বাজে আমার ছােট মেয়েটি ইন্তেকাল করলেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) সে পূর্ব হতে অসুস্থ ছিল আমি তাকে এক কক্ষের চৌকির উপর চাদর দিয়ে মােড়িয়ে রাখলাম এবং পরিবার পরিজনকে সর্তক করে দিলাম কান্নাকাটি যেন না থাকে। কেহ যেন কাকে না বলে যাতে সকল করুণাহীন পরিণত না হয়। সকল আনন্দ যেন চিন্তায় পরিণত না হয়, অন্যতায় সকল এন্তেজাম বিশৃঙ্খল হয়ে যাবে হযরত রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর খাদ্য গ্রহণ করার পর দাফন কাফনের ব্যবস্থা করব তােমরা যেভাবে খাদ্য   তরকারী পাকে মশগুল রয়েছ, সেভাবে থাকুন, দুপুরের সময় প্রায় একটা বাজে দস্তর খানা বিছিয়ে যখনই হুজুর রাহমতুল্লাহি আলাইহি কে তাশরীফ আনার আমন্ত্রণ জানানাে হল তিনি দস্তর খানায় তাশরীফ আনলেন এবং নাছির উদ্দিন সাহেবকে সম্বােধন করে বললেন ! নাছির! “তােমার ছেলে সন্তান সবাই ভাল আছেন"? আরজ করলেন জি হুজুর! ভাল আছেন। পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন কোথায়


উত্তরে বললেন- হুজুর এরা এদিক ওদিক ঘুরা ফিরা করছে এবং খেলা-ধুলা মশগুল আছেন হুজুর রহমতুল্লাহি  আলাইহি এরশাদ করলেন- সকলকে আমার সামনে নিয়ে আসুন। আমি আমার দুই ছেলেকে হুজুরের সামনে হাজির করলাম। হুজুর বললেন তােমার ছােট কন্যাটি কোথায়? আরজ করলাম হুজুর! সেইতাে ঘুমাচ্ছে। হুজুর আরজ করলেন- তাকে জাগ্রত করে নিয়ে এস। আমি বলিলাম গভীর নিদ্রায় হুজুর রাহমতুল্লাহি আলাইহি একটু চাপ প্রয়ােগ করে বললেন, তাঁকে নিয়ে এস। তাকে না আনা পর্যন্ত আমি খাদ্য ভক্ষণ করবনা পরিশেষে অপরাগ হয়ে আমি কান্নায় আত্মহারা হয়ে বললাম হুজুর! সে তাে সকাল আটটা নয়টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করিয়াছে তিনি অত্যন্ত বিছলিত হয়ে গেলেন। সে কি মরে গেল? এরূপ বলতে বলতে তিনি আমার সাথে লাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেল এবং গভীর চিন্তিত অবস্থায় কিছুক্ষণ দেখার পর স্বীয় হাত মােবারক লাশের বক্ষের উপর রাখলেন। তার পর উভয় চক্ষুকে তার হাত মােবারকের শাহাদাত আঙুল দ্বারা পাতা সমূহ খােলে দিলেন আর বলতে লাগলেন না-না সেইতাে মরেনি সেতাে জীবিত আছে। তাঁর বক্ষে ছটপট ছটপট আওয়াজ হচ্ছে চোখের পােতলায় ছায়া পরে আছে তিনি তাঁর নাকের উপর হাত রেখে বললেন, দেখ- দেখ শ্বাস প্রশ্বাস বেরিয়ে আসছে। হায় হায়। তােমরা ভাল মানুষ হয়ে জীবিত একজন মানুষকে  মৃত বলতেছ? অবশ্যই সে অধিক দূর্বল? দূর্বলতা অনেক সময় রক্ত শূণ্যতার কারণ হতে পারে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে ভাল  হয়ে যাবে। তাড়াতাড়ি তার মাকে বলুন। আস্তে-আস্তে অল্প-অল্প গরম দুধ যেন তার মুখে দেয়। তারপর তিনি নাছির উদ্দিনের  মেহেমানদারী কবুল করলেন তাঁর হতে এত বড় কারামত প্রকাশের পরও নিজেকে ঢাকিয়ে দিলেন যেন উপস্থিত সকলকে দূর্বল করিয় দেয় তার সুস্পষ্ট বাণী দিয়ে, বললেন- “একজন জীবিত মানুষকে কিভাবে তােমরা মৃত বলে দাবী করছাে? তিনি এই বলে  তার ক্ষমতাকে গােপন করলেন যে, এখানে তার কারামতের কোন হাত নেই। 

সাপের বিষ পানিতে পরিণত:
 একবার হযরত গাউসে আযম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি কতেক খাদেমসহ নক্শবন্দীয়া মােজাদ্দেদীয়া
তরিকতের উজ্জল নক্ষত্র শাহসুফি সৈয়দ নুর মােহাম্মদ বদায়ুনী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাজারে জেয়ারতের
উদ্দেশ্য হাজির হলেন।  হযরত গাউছে খুলনবীর রাহমতুল্লাহি আলাইহি খাদেমগণ হতে একজন ছিলেন দিল্লির
অধিবাসী যিনি নব মুসলিম জনাব আব্দুল [C বাকী (প্রকাশ, গােফি নাথ) তিনি গাউসে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর অত্যন্ত প্রেমিক ও ভক্ত ছিলেন। মুমিন ছিল অত্যন্ত গােপনে হযরত সৈয়দ নুর মােহাম্মদ বদনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর মাজার শরীফের চতুর্দিকে অতি ফলম্বা লম্বা ঘাস ছিল যা জঙ্গলে পরিণত ছিল।
হযরত খুলনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় খাদেমকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তােমরা এই ঘাসগুলাে পরিস্কার করে

নাও, ভক্ত প্রেমিকগণ পরিস্কারের কাজে নিয়ােজিত হলেন। হঠাৎ আব্দুল ৰাকী ছাহেব চিৎকার দিয়ে বললেন,
হুজুর আমাকে সাপে দংশন করল ! কান্নার সুরে কাতর হয়ে বললেন দেখুন !  আমার আঙ্গুল কালাে হয়ে গেছে।
হযরত খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি তাড়াতাড়ি তার আঙ্গুলটাকে স্বীয় মুখের মধ্যে দিয়ে চুষলেন। প্রায় পাঁচ মিনিট
পর্যন্ত তার আঙ্গুল স্বীয় মুখে রেখে চুষার পর বের করে মুখ থেকে থুথু মােবারক তার আঙ্গুলে লাগিয়ে দিয়ে বললেন
না না সাপে-টাপে কাটে নাই তােমার দেখতে ভুল হয়েছে বাকী ঘাস পরিস্কার করে নাও। কিন্তু হুজুর রহমতুল্লাহি
আলাইহি যে বিষ তার আঙ্গুল হতে চুষে নিজ মুখে নিয়েছেন, তাহা ফেলে দেননি। বরং তিনি খেয়ে ফেলেছেন।
অথচ তাঁর শরীরে সাপের বিষের কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। গােফিনাথ পূর্বের ন্যায় ঘাস পরিস্কার করতে
লাগলেন। তার শরীরেও বিষের কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। পরিস্কার করার। কাজে নিয়ােজিত খাদেমগণ
স্বচক্ষে দেখলেন কালাে মােটা একটি সাপ দংশন করে পালাচ্ছে, কেহ কেহ স্পষ্ট করে পরিচয় দিয়ে বললেন,
উহা হলাে কালাে গােখরা সাপ। কিন্তু তিনি নিজের মাহত্ম লুকানাের জন্য বলে দিলেন না-না তােমাদের দেখার
মধ্যে ভুল হয়েছে মনে হয় এতবড় একটি কারামতের তিনি কোনই গুরুত্ব দিলেন না ঘাস পরিস্কার কারী খাদেম
সমূহের মধ্যে আব্দুল বাকী ও অন্যান্য খাদেমগণ হুজুর যা বলেছ। তাতে আদব রক্ষার্থে চুপ রইলেন এবং হুজুরের
কথার সাথে সুর মিলিয়ে বলছে যে, অন্য কোন পােকামাকড় হতে পারে, ঘাস পরিস্কারকারী খাদেমদের মধ্যে গাউসে
খুলনবীর রাহমতুল্লাহি আলাইহি সম্মানিত খলিফাদ্বয় যথাক্রমে হযরত মাওলানা ইসলাম শাহ্ চাটগামী রাহমতুল্লাহি
আলাইহি ও সৈয়্যদ মাহমুদুল হাছান রেজবী নকশবন্দী মােজাদ্দেদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি ও উপস্থিত ছিলেন যিনি
করাচির অধিবাসী শতাধিক গ্রন্থের প্রণেতা ও শ্রেষ্ঠ মুসলিম কবি ।



মৃতকে জীবন দান:
একসময় গােফি নাথ (নব মুসলিম আব্দুল বাকি সাহেব) স্বীয় মুরশিদ হযরতে গাউসে দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি
এর আস্তানায় তাশরিফ নিলেন। হঠাৎ একদিন নব মুসলিম আবদুল বাকি ছাহেব একটি কন্যার লাশ নিয়ে তাঁর পাক
চরণে উপস্থিত হলেন, হুজুরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন। হুজুর আমার কন্যা আমার ঘরের  সকলেই বলতেছে
যে মারা গেছে। তাকে  আগুনে জ্বালানাের জন্য সবাই নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাদেরকে বললাম  যে, এই কন্যা মরে নাই
আমি তাঁকে মৌলভী সাহেবের খদমতে পেশ করব যদি তিনি (রা.) বলেন এই কন্যা মারা গেছে তাহলে তোমরা সবাই
তাকে আগুনে জ্বালাবে জোর পূর্ব আমি তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসলাম। রাহমতুল্লাহহি আলাইহি তাকে
দেখে বললেন সম্ভবত মারা গেছে। তিনি মনােযােগ সহকারে দেখজোন পরে স্বীয় ডান হাত তার বক্ষে রাখল, তারপর
তার চোখের পাতা খুলে চোখের পাতাগুলিকে শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বললেন না- না সেইতো মরেনি।
তুমি ঠিকই বলেছ বরং জীবিতের সমস্ত চিহ্ন তার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে তাঁর বক্ষ নড়াচড়া করছে চোখের পাতাগুলিতে
একটু পদ পড়ছে আব্দুল বাকিকে ইশারা করে বললেন যে, তুমি একটু দেখােতো আমার কাছে জীবিত অনুভব হচ্ছে।
তারপর নাকে হাত রাখলেন এবং বললেন দেখুনতাে আস্তে আস্তে শ্বাস প্রশ্বাস বের হচ্ছে, না-না ইনিতো মরেনি তােমাদের
ঘরের লােকেরাতাে বুদ্ধিহীন। জীবিতকে মৃত বলে আগুনে জ্বালাতে চেষ্টা করছে। সেইতাে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে গেছে। তাকে
খুব ভালভাবে চিকিৎসা কর, ভাল হয়ে যাবে। উক্ত মহিলা এখনই জীবিত আছেন জনাব আব্দুল বাকি সাহেবও জীবিত আছেন।
দেখুন ইহাতেও সুন্দর ভাবে নিজ কারামতকে ঢেকে নিলেন।


বােবাকে জবান প্রদানঃ
একবার খুলনা দরবার শরীফে ওরশ শরীফ হচ্ছিল, উক্ত ওরছ শরীফে হযরত খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি ফাতেহা
পাঠ করে দোয়া করার পর তিনি নিজ স্থানে বসে রইলেন। দুই ব্যক্তি বার তের বৎসরের একজন বালক নিয়ে থরথর
করে কাঁপানাে অবস্থায় দাঁড়ালেন। যারা প্রথম থেকে সেখানে বসছিল। হুজুর মােবারক রাহমতুল্লাহি আলাইহি উক্ত
ছেলে হতে জানতে চাইলেন যে তােমার কি হয়েছে? কথা বলতেছনা কেন? তুমি কি অসুস্থ হয়ে পড়েছে, নাকি অন্যকিছু
তুমি কথা বলতেছনা কেন? লােকটি বলল হুজুর সে কথা বলতে সক্ষম নই, সে জন্মগত বােবা। তিনি (হুজুর রাহমতুল্লাহি
আলাইহি) সে বালকটিকে নিজের সম্মুখে বসালেন। মুখ খােলার জন্য বললেন, সে মুখ খুলল। খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি
স্বীয় ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল মােবারক তার মুখে প্রবেশ করিয়ে জিহবাকে এদিক থেকে দিকে, ঐদিক থেকে এদিকে,
কয়েকবার নেড়ে দিলেন ধীর ধারে স্বীয় আঙ্গুল মােবারক বের করে ছেলেটিকে সম্ভোধন করে বললেন। তুমি কথা বলছ না কেন?
কথা বল। তােমার নাম কি? সে কোনটির উত্তর দিল না, কথা বল তােমার নাম কি? সে কোনটির উত্তর দিলনা। হযরতের চেহারা
মুবারকের দিকে তাকিয়ে রইল তিনি পুনরায় বললেন, কিন্তু তিনি দ্বিতীয় বার উচ্চস্বরে বললেন) প্রিয় বৎস; তুমি কথা বলছ না
কেন? কথা বল তােমার নাম কি? ছেলেটি কোন উত্তর দিল না। তিনি পুনরায় এরশাদ করিলেন হে ছেলে ! তুমি ইচ্ছা
করে কথা বলছ না কেন? কথা বল; তােমার নাম কি? সে বােবা হয়ে আর বসে না থেকে সহজে তার নাম বলে
দিল। তারপ জিজ্ঞাসা করল তার পিতার নাম কি? সে পিতার নাম বলে দিল হুজুর মােবারক জিজ্ঞাসা করলেন।
তােমার গ্রামের নাম কি? পিতার নাম বলে দিল। হুজুর মােবারক জিজ্ঞাসা করলেন । তােমার গ্রামের নাম কি? সে গ্রামের নাম উল্লেখ করল । অতঃপর তিনি সবাইকে সম্বােধন করে বললেন। তােমরা বলতেছ, সে কথা বলছেনা। সেইতাে কথা বলেছে নিজের নাম পিতার নাম গ্রামের নাম সবই বলেছে। এতটুকু বলে তিনি মজলিশ হতে উঠে গেলেন। সে ছেলেটা জনগণের ভীড়ে পড়ে গেল। উপস্থিত আশেকানও ভক্তগণ জন্মগত বােবাকে কথা বলতে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল । হুজুর মােবারক উহাকে সাধারণ বিষয় বলে এড়িয়ে মজলিস ত্যাগ করলেন।

তিনশত জনের খাবার হাজার লােকের গ্রহণ:
মােহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ছাহেব এম, এ. বি. এল চট্টগ্রাম জেলার অধিবাসী। তিনি হযরত কেবলা রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর একনিষ্ট ভক্ত। প্রথমাবস্থায় তিনি মুন্সেফ ছিলেন। গাউসে আযম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর দোয়ায় ক্রমে ক্রমে। তিনি জেলা বিচারপতি হলেন। জেলা বিচারপতি হতে অবসর গ্রহণ করে হযরত খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর সাজ্জাদানশীন বড় সাহেবজাদা হযরত শাহসুফী মাওলানা আব্দুর রহীম (রহ.) এর পাক চরণে খেদমতের উদ্দেশ্যে হাজির হয়ে আরেকবার চাকুরী পাওয়ার জন্য আবেদন করলে তিনি দ্বিতীয় বার পূর্ব পাকিস্তানের ট্রাইবুনাল বিচার প্রতি নিযুক্ত হলেন। কয়েক মাস চাকুরী করার পর উক্ত পদ থেকে অবসর নিয়ে নিজ জেলা চট্টগ্রামে উকালতির দায়িত্ব নিল। মুন্সেফ সাহেব বা বিচারপতি সাহেব খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার (সাতক্ষীরা বর্তমানে জেলা) মুন্সেফ ছিলেন! তিনি নিজের কন্যার বিবাহে হযরত রাহমতুল্লাহি আলাইহি কে খানকাহ শরীফের সকল খাদেম সহ দাওয়াত দিল সকলে বিবাহ অনুষ্ঠানে শরীক হলেন।
আকদ ও বিবাহের অন্যান্য কাজ প্রচলিত নিয়মানুযায়ী অনুষ্ঠান। | শেষ করার পর মেহেমানদেরকে আপ্যায়নের জন্য দস্তর খানা দিলেন। প্রথম বারে কমপক্ষে চারশত মানুষ বসে গেল। খাদ্য দেয়ার অনুমতির জন্য সকলে মুন্সেফ সাহেবকে তালাশ করতে লাগল । কিন্তু মুন্সেফ সাহেবকে পাওয়া যাচ্ছেনা। পরিশেষে মুন্সেফ সাহেবের একনিষ্ট বন্ধু মাস্টার ফজলুল হক চাটগামী তাকে তালাশ করতে করতে এক কক্ষের মধ্যে পৌছল। তথায় দেখতে পেল মুন্সেফ সাহেব কক্ষের এক কোণে মাথা নিচু করে বসে আছেন। তার চক্ষু হতে পানি ঝরছে। মাস্টার সাহেব বললেন ভাই সাহেব, আপনি এখানে বসে আছেন কেন? আর। ঐ দিকে খাদ্য পরিবেশনের আয়ােজন করা হয়েছে আর আপনি এখানে বসে আছেন ব্যাপার কি? মুন্সেফ সাহেব বলিল আমি এই দৃশ্য দেখার পরই তাে এখানে চুপ করে বসে রইলাম। কেননা আমার আয়ােজন হল বরের সাথে আসবে একশত মেহমান, নিজস্ব হবে একশত, আমার মুর্শিদ কেবলার সাথে । পঞ্চাশ জন। অতিরিক্ত হবে পঞ্চাশ জন, মােট তিন শত | মানুষের খাদ্য আয়ােজন করেছি মাত্র। এখন আমি দেখতেছি প্রথম বারে চারশত মানুষ বসে গেছে। অর্ধেকের চেয়ে বেশী। মানুষ আসেনি আমি এখন কি করতে পারি? আমার বুদ্ধি যে কাজ করছেন। আমার ইজ্জত শেষ হল । আমার সম্মান মাটির সাথে মিশে গেল। তার উত্তরে মাস্টার বলল তুমি এরূপ মহিলার মত ঘরে বসে কান্নাকাটি করলে তােমার নাম ও ই এ ৩ সম্মান বাকী থাকবে কি? এখন ও কিছু হয়নি। আপনার সমস্ত চিন্তা এখনই দূর হয়ে যাবে । আমার মতানুসারে কাজ করে যাও তাড়াতাড়ি হুজুর মােবারকের পবিত্র কদমে গিয়ে পড়ে থাক। এবং নিজের দুঃখ চিন্তার কথা প্রকাশ কর আমার পূর্ণ বিশ্বাস ও আকিদা এর মাধ্যমে আপনার চিন্তা দুর হবেই । তদ্রুপ মুসেফ সাহেব কান্নাকাটি করতে করতে হুজুর কেবলা রহমতুরাহে আলাইহ এর পাক চরণে লুটিয়ে পড়লেন। কিন্তু মুখে কোন কিছু বলতেছেনা । হযরত রাহমতুল্লাহি আলাইহি কান্নাকাটি দেখে গোপন রহস্য প্রকাশ করতে বিন্দু মাত্র ঐটি না করে বলে দিলেন ‘খাদ্য কি প্রস্তুতঃ? তিনি ক্ষীণ স্বরে বললেন জ্বী হুজুর । তাহলে চলুন দেখি কত খাদ্য তৈরী হয়েছে । অতঃপর তিনি বাবুর্চি ঘরে তাশরিফ নিলেন। ধারাবাহিক ভাবে , বিরানির প্রত্যেক ডেকসির ঢাকনা উল্টিয়ে গভীর নজর করে ঢাকনা দিয়ে। ঢেকে দিলেন । পরিশেষে তিনি আশ্চর্য হয়ে বললেন । মাশাআল্লাহ তুমিতাে অনেক বিরানি তিন-তিন ডেকছি তৈরী করেছ । এ গুলাে বিরানি তাে, এত বিরানি কে খাবে? তােমার নিকট এত মানুষ কোথা হতে? চল, খাদ্য দিতে শুরু কর। কিন্তু খেয়াল রাখবে যে যতক্ষণ পর্যন্ত একটি ডেকছি খালি না হওয়ার আগে আরেকটি ডেকছি যেন উল্টানাে না হয়। এত টুকু বলে তিনি আরেকটি কক্ষের মধ্যে তাশরিফ নিলেন। যখন সকল লােক খাওয়া শেষ করলেন। তিনি এরশাদ করেন যে, মুন্সেফ সাহেবকে ডেকে আন। আমি নিয়মানুযায়ী তাকে ডাকলাম । তিনি প্রশ্ন করলেন সকল লােকের খাওয়া শেষ হয়েছে? মুন্সেফ বললেন জি- হুজুর, সকলের খাওয়া শেষ হয়েছে। কমপক্ষে নয়-দশ শত মানুষ খেয়েছে এখনও পঞ্চাশ জনের খাদ্য মওজুদ আছে দেখুন আমি তাে বলেছি তােমার কাছে এত প্রচুর বিরানী যে খাওয়ার জন্য মানুষ নেই । তুমিতাে ভীত হয়ে রাস্তা খুঁজে পাচ্ছনা। হযরত রাহমতুল্লাহি আলাইহিকে মেহমানদারী কবুল করার জন্য নিবেদন করা হলে তিনি উত্তর করলেন আমার খানা বােটে (ইঞ্জিন বিশিষ্ট নৌকা) পৌছিয়ে দাও আমি সেখানে গিয়ে খাবার গ্রহণ করব ।
বােমা নিষ্ক্রিয়:
মৌলভী সুলতান আহম্মদ সাহেব এম.বি.এল বার্মার অধিবাসী । তিনি বলেন যখনই জাপানীরা বার্মায় হামলা করল । সে সময় আমি একদিন এক গ্রাম হতে পায়ে হেঁটে আকিয়াব এসে একটি ময়দানের পাশ দিয়ে অতিক্রম হচ্ছি একদিন জাপানীরা বার্মায় আকাশ সীমানা লঙ্গন করে ফড়িং এর ঝাকের মত উড়ে।
জাহাজের মাধ্যমে বােমা হামলা চালাল, একটি বােমা আমার ছয়-সাত হাত সামনে পড়ল। ঐ সময় স্বচক্ষে দেখতে পেলাম আমার প্রাণ প্রিয় হুজুর হযরত গউসে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি আমার সম্মুখে এসে বললেন হে বােমা সাবধান! বিস্ফোরণ হইওনা”। এখানে আমারই সােলতান দাঁড়িয়ে আছে। বােমাকে তিনি পায়ে চেপে মাটির নীচে ঢুকিয়ে দিলেন । যে কারণে বােমা বিস্ফোরণ ঘটেনি। সেখানে দাড়িয়ে তিনি স্বীয় হস্তের শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা উড়ােজাহাজকে ইশারা করে বললেন যে জাপানের দিকে চলে যাওয়ার জন্য। অতঃপর জাহাজ থেকে বােমা হামলাভিযান বন্ধ হয়ে গেল । সকল উড়াে জাহাজ যে দিক থেকে এল সে দিকে পুনরায় ফিরে গলে । সে সময় তার প্রতি এমন মহব্বত এবং শ্রদ্ধা বেড়ে গেল যে যার কোন অন্ত নেই। একদম অনুভূতিহীন ও আশ্চর্য হয়ে নিজ স্থানে দাড়িয়ে রইলাম। হাজার চেষ্টা করার পর ও নিজেকে নাড়াছাড়া করতে সক্ষম হচ্ছিনা। তার পর তিনি চক্ষু থেকে অদৃশ্য হল। মনে হচ্ছে তিনি পাশেই লুকিয়ে রইল। পরক্ষণই আমার হুঁশ আসল। এদিকে হযরত খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি যুদ্ধাবস্থায় বার্মা ও আকিয়াবের সমস্ত খাদেমগণের ব্যাপারে অত্যন্ত চিন্তিত থাকতেন। যার কারণে যুদ্ধ শেষ হওয়ার সাথে সাথে তিনি বার্মায় তাশরীফ নিলেন । যখন হযরত খুলনবী রহমতুল্লাহে আলাইহ আকিয়াব নামক শহরে পৌছলেন তখন সােলতান আহম্মদ তাকে দেখে সােয়াকোটি মানুষের সম্মুখে মহানসমাবেশে প্রেমাবেগে উচ্চ স্বরে কেঁদে কেঁদে বলতে আরম্ভ করলেন “ওয়াল্লাহঃ অর্থাৎ আল্লাহর শপথ! জাপানীদের বােমা আক্রমণ হামলার দিন তিনিই বর্তমান পরিহত পােষাকে ছিলেন। এই টুপি, এই জামা, এই পাগড়ি, এই জুতা পরিধান অবস্থায় আমার সম্মুখ হতে বােমা সরিয়ে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন “হে বােমা সাবধান! বিস্ফোরণ ঘটিও না আমার সুলতান এখানেই আছে”। এ কথা গুলাে বার বার বলে কান্নাকাটি করতে ছিলেন। সােয়া কোটি মানুষেরা হযরতের সােহবতে প্রাপ্ত হয়ে সােলতান আহমদের সাথে কাদছে আর কাদছে। শুধু তা নয়। তার প্রতিটি কথাবর্তায় চাল চলন এবং ইশারা কারামত পূর্ণ ছিল।
 সুঘ্রাণ : 
একসময় হযরত গউসুল আযম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত শাহসুফী সৈয়দ মাওলানা গউসে দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি হতে তরিকতের খেলাফত লাভে ধন্য হওয়ার পর স্বীয় গ্রাম (সাতক্ষীরা জেলার) চাপড়ায় নিজস্ব মহল্লার মসজিদে প্রতিদিন মাগরিবের নামাজ শেষান্তে অজিফা পাঠ করিতেন। এলাকার জনগণ অনেকেই তাকে সহজে মেনে দিকে সম্বােধন করে বললেন দেখুন ঐখানে বসে আছেন তিনি কিনা? ঐ কাবুলিওয়ালা হযরতকে দেখে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন এবং চিৎকার করে বললেন ইনিই সেই ব্যক্তি যার ভিতর হতে হযরত গউসে দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর সুঘ্রাণ বেরিয়ে আসছে।
 এক মুষ্টি চালে এক মণ ভাত : 
একসময় হযরত গউসুল আযম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি সুন্দরবনের পার্শ্ব দিয়ে তরিকতের কাজে দ্বীন প্রচারে যাচ্ছিলেন, সে সময় হযরত গাউসুল আযম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর স্বামী কিছু লােক সুন্দরবনে প্রত্যেকের নিজ নিজ অভ্যানুযায়ী মধু সংগ্রহ, কাঠ ও ঘরের ছাউনি দেয়ার পাতা সংগ্রহ সহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে একটি কাফেলা বের হয়েছিল। তারা সেখানে যা খাদ্য রসদ সঙ্গে নিয়েছিল তা শেষ হয়ে যাওয়াতে তীব্র ক্ষুধার তাড়নায় তারা নদীর কুলে বেহুঁশ অবস্থায় কোন নৌকার মাঝির সাক্ষাতের আশায় তীর্থের কাকের মত পড়ে রইল, হঠাৎ তারা একটি নৌকা দেখতে পেল । সেখানে হযরতে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি বসে আছেন। তারা নৌকার মাঝিকে ডেকে তাদের ক্ষুধার তাড়নার কথা উল্লেখ করলেন। হযরত খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি চোখ বন্ধ করা অবস্থায় ছিলেন হঠাৎ তিনি চক্ষু মােবারক খুলিলে মাঝি মাল্লা হযরতকে কাঠুরিয়ার অবস্থা জনাল । হযরত খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি তাদের কথা শুনে এক মুষ্টি চাল দিলেন এবং বললেন এ নাও, তােমরা রান্না করে খাও। মাঝি নৌকা ছেড়ে দিল, এদিকে ক্ষুধার্ত ব্যক্তিরা এক মুষ্টি চাল দিতে দেখে হযরতকে বিভিন্ন অকথ্য কথা বললেন কেমন পীর! কোন জ্ঞানে এত লােককে এক মুষ্টি চাল দিলেন সেই কাফেলাতে একজন বৃদ্ধ ছিল যিনি হযরতের ভক্ত। সে যুবকদের কথায় কান না দিয়ে একটা ডেকসি সগ্রহ করে চাল গুলাে ধৌত করে আগুন জালিয়ে রান্নার কাজ শুরু করলেন। এদিকে যুবকরা বলাবলি শুর করল যে, মুখ বৃদ্ধ মূখের ন্যায় কাজ শুরু করেছে। এক মুষ্টি চাল দিয়ে কি আর হবে? বৃদ্ধ তাদের কথা কর্ণপাত না করে মনােযােগ সহকারে রান্নার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ বৃদ্ধ দেখতে পেল ডেকসির পানি যখন উত্তপ্ত গরম হয়ে সিদ্ধ হতে লাগল আর ডেকসির চতুর্দিকে সিদ্ধ পানি সহ ভাত ডেকসির বাইরে পড়ে যাচ্ছে। তিনি তা কতগুলাে পাতা সংগ্রহ করে পাতার উপর ভাত গুলাে রাখতে শুরু করল। এভাবে রাখতে রাখতে বৃদ্ধ দেখল ভাতের পরিমাণ এক মণের কাছাকাছি পৌছল । সেই ইহাতে বুঝতে পারল যে, ডেকসি যদি এভাবে চুলার উপর থাকে তাহলে ভাত পড়তেই থাকবে। তিনি আত্মহারা হয় হাঁক দিয়ে কান্নাকাটি করে ডেকসিটি নামিয়ে যুবকদেরকে ডাকতে শুরু করল তােরা তাড়াতাড়ি আয় খাদ্য খেয়ে নে আর দেখে যা পীর আউলিয়ার শানও কারামত, বৃদ্ধ লােকের বারংবার আহবানে বিরক্ত হয়ে যুবকরা বলল চলরে চল সবাই চল বৃদ্ধ খাদ্য দিতে না পারল ওকেই খাব, সবাই গিয়ে দেখতে পেল ভাতের এক আশ্চর্য স্তুপ, সবাই বৃদ্ধ থেকে অবস্থা। জানতে চাইলে বৃদ্ধ কেঁদে কেঁদে বলেউঠল তােরা দেখে যা পীর আউলিয়ার শান ও কারামত । 

শরীর আগুনে পেড়িল না : 
হযরত গাউসুল আযম খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ভক্ত বন্দের কোন সীমা ছিল না। মুসলমান ছাড়া, হিন্দু, বৌদ্ধ । খ্রীষ্টান, ইহুদী, মগ, চাকমা ও যুগী সহ ইত্যাদি ধর্মের গংশে তার হাজার হাজার জ্বীন ভক্ত ও মুরিদীন ছিলেন। তার ভক্তদের মধ্যে | একজন হিন্দু ভক্ত ছিলেন যার নাম “যদুনাথ” খুলনা দরবার | শরীফের পূর্ব দিকে তার বাড়ী। তিনি ঠাকুর পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি গাউসে খুলনার এমন ভক্ত ছিলেন যে, যার কোন তুলনা ও দৃষ্টান্ত নাই, যদুনাথ সাহেব হুজুর রাহমাতুল্লাহি আলাইহিকে “মহাপুরুষ হিসেবে সম্বোধন করতেন। মােট কথা, যদুনাথ সাহেব হুজুর ছাড়া অন্য কাউকে মহা পুরুষ হিসেবে বিশ্বাস করতেন না। তিনি মুসলমান ধর্মের প্রতি অত্যন্ত বিশ্বাসী ছিলেন, বিধায় তিনি প্রতি বছর রমযান মাসে দু'বার হুজুরের দরবার শরীফের জামে মসজিদের মুসল্লিদেরকে ইফতার করাতেন । এক সময় হুজুর রাহমতুল্লাহি আলাইহি দক্ষিণে তরিকতের দায়িত্ব নিয়ে দ্বীন প্রচারের বের হলে যদুনাথ মারা যান। হিন্দুদের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী ব্রাহ্মণরা তাঁকে আগুনে পােড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। হিন্দু ধর্মের সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করে তাকে চিতায় বা শশ্মাণ খােলায় নিয়ে যায়, তারপর তারা বিভিন্ন প্রকার গাছের লাকড়ি আর কেরােসিন দিয়ে ব্রাহ্মণ মন্ত্র পড়ে যদুনাথ সাহেবের ছেলেকে বলল এবার জন্মদাতা পিতার মুখে আগুন লাগিয়ে দাও। পন্ডিত বাহ্মণের কথানুযায়ী আগুন দিল কিন্তু হযরত এর ভক্ত যদুনাথ আগুনে পােড়া যাচ্ছে না। শুরু হল ব্রাহ্মণদের গবেষণা। গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নিলেন তার পাপ বেশি হওয়ার কারণে আগুনে পােড়া যাচ্ছে না। যদুনাথ এর ছেলেকে ডেকে বলল তােমার পিতাকে ভাল ঘি দিয়ে | পােড়াতে হবে নতুবা পােড়া যাবে না। হিন্দুদের ধর্মোপদেষ্টাদের পরামর্শ অনুযায়ী ঘি আনা হল। ব্রাহ্মণরা বলল এ পাপীকে ঘি দ্বারা পােড়াতে হবে, যা হােক বিভিন্ন প্রকারে উন্নতমানের কাঠ ও ঘি দিয়ে শুরু হল যদুনাথ পােড়ার অনুষ্ঠান। কিন্তু কাঠ জ্বলে ছাই হয়ে গেল এমনকি ঘিও জ্বলে গেল । কিন্তু হযরতের বিধর্মী ভক্ত যদুনাথের একটি পশমও জ্বলেনি।
পরিশেষে হিন্দু ধর্মের উপদেষ্টারা নিরুপায় হয়ে তাঁকে নদীতে ভাসিয়ে দিল। “প্রেমের মরা তাে জ্বলে ডুবে না আগুনে পােড়া ” জোয়ার আসে আর যায়, যদুনাথও জোয়ারের সাথে সাথে হুজুরের বাড়ীস্থ নদীর ঘাটে আসে আর যায়। কিছুদিন পর হযরত গাউসুল আযম খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি সফর হতে দেশে ফিরলে তার এক মুরিদকে বললেন তুমি যদুনাথকে নদী থেকে তুলে দাফন কর। তার আরাদনা আর সহ্য হচ্ছে না, পরে যদুনাথকে এক সপ্তাহ পনের দিন পরে পানি হতে উত্তোলন করলে দেখা যায় তাঁর শরীরে কোন পঁচা বা দুর্গন্ধ অনুভব হয়নি।

পাতার ঘর্ষণে স্বর্ণ তৈরি হওয়া:
হযরত শাহছুফী সৈয়দ মাওলানা মােহাম্মদ ইসলাম শাহ চাটগামী নকশবন্দী মােজাদ্দেদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি অধিকাংশ সময় স্বীয় ছাহেবজাদা ও বিশিষ্ট নিকটবর্তী আমার মুর্শিদ কে বলা হযরত শাহসুফী। গাউসুল আযম খুলনবীর রাহমতুল্লাহি আলাইহি সাথে সফরে ছিলাম। একদিন গাছ পালায় ভরপুর একবাড়ীতে দাওয়াত গ্রহণের পর হুজুর মােবারক রাহমতুল্লাহি আলাইহি তথায় তাশরীফ নিলেন। হঠাৎ তিনি আমাকে ডেকে বললেন ইসলাম! আমার পেশাব করতে হবে, এন্তেজার জন্য পানির ব্যবস্থা কর। আমি বদনা নিয়ে সামনে অগ্রসর হলাম হুজুর সামনে আরাে অগ্রসর হলাে। এভাবে যেতে যেতে তিনি গভীর জঙ্গলে পেীছল । তখন তার হাত মােবারক দ্বারা দুই গাছের দুটি পাতা হাতে নিলেন। দেখলাম উভয় পাতা একটি আরেকটির সাথে ঘষা মেরে লাগানাের সাথে সাথে স্বর্ণ হয়ে গেল । হুজুর মােবারক রাহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন দেখ ইসলাম, দুটি দুই গাছের পাতা একটি আরেকটির সাথে ঘমেরে লাগার সাথে সাথে স্বর্ণ হয়ে গেল তুমি এটা শেখে নাও, কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া যাবে। আর এই দেশে তােমার চেয়ে বড় ধনী থাকবেনা। তুমি দীর্ঘদিন ধরে আমার খেদমত করতেছ। এর বিনিময়ে ইহা গ্রহন কর। তখন আমি চাটগামী হুজুর রাহমতুল্লাহি আলাইহি হুজুর মােবারক রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর নুরানী কদমে পড়লাম । আরজ করলাম হুজুর আপনার কাছে স্বর্ণ চাইনি স্বর্ণ তৈরীর কৌশল ও চাইনি বরং আমি আপনার দরবারে স্বর্ণের সৃষ্টিকর্তাকে চাই এবং আমার মৌলায়ে হাক্কাকিকে চাই মেহেরবানী করে আপনার গােলামীতে রেখে মৌলায়ে হাকীকীর দিদার দান করুন।
সৈয়দ শাহছুফি মাহমুদুল হাছান নকশবন্দী মুজাদ্দেদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন- আমি গুণাহগার সেই পবিত্র জাতে পাকের সাথে সফরে বাড়ীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘ ষােল বছর ধারাবাহিক ভাবে তার স্বীয় করুণা দয়া মেহেরবাণীতে হযরতের খেদমতে প্রভুর সাথে সাক্ষাত তথা বেছাল শরীফ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। নতুবা কি সম্পর্ক আছে মৃত্তিকার সাথে বিশ্বজগতের। যদি আমার শরীরের প্রতিটি লােমে সত্তর-সত্তর জিহবা হয়। প্রতি জিহবা যদি হযরত গাউসে খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহির দয়া করুনা, দানও শিক্ষা দীক্ষার জন্য কৃতজ্ঞতা আদায় করতে চাই তা হলে কিয়ামত পর্যন্ত করলে ও শেষ করা যাবেনা। কোন দিন সম্ভব ও হবেনা। আমার এ দীর্ঘ জীবনে তার খেদমতে থাকাকালীন কথাই ও কাজে কর্মে সুন্নাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের বিপরীত কিছুই দেখিনি। তিনি নবীজির সুন্নাতে অতি লােভী ছিলেন যে নবীজির কোন সুন্নাত সহজে ত্যাগ করেন নাই।
যেমন ঃ তাকে অস্বীকার কারী বিদ্বেষী শত্রুগণ অশােভনীয় অশালীন ও অকথ্য ভাষায় তাকে গালি দিতেন। এলাকাবাসির অনেকেই দুঃখ কষ্ট দিতেন। শুধু তাই নয় হযরতের শত্রুগণ হিংসুকগণ তাঁকে যাদুকর ও ছেহেরকারী বলে বিরোধিতা করতেন। হযরতের স্বীয় দেশের সাধঅরণ জনগণ এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গ কঠোর বিরোধীতা করেন, অনেক দুঃখ-কষ্ট যন্ত্রণা দিলেন বড় বড় সভা মজলিসের ও সমাবেশের আয়োজন করে জনগণের উদ্দেশ্য বলতেন হে লোকেরাঃ
পীর সাহেবের কাছে যেওনা। তিনি ছেহের ও যাদু বিদ্যা জানেন সেখানে গেলেই তাঁর দৃষ্টি গোচর হওয়ার সাথে তোমার চিৎকার করে কাঁদতে থাকবে তোমাদের শরীরে কম্পন সৃষ্টি হবে। পরিশেষে কম্পন করতে করতে তার পায়ে ঝুঁকে পড়বে। ফলে তোমরা বৃথায় পরিণত হবে।  যখনই এ সংবাদ হকের পাক দরবারে শীছতেন তখন তিনি উ৫) স্বরে বলতেন অবশ্যই অবশ্যই আমি যামু কই, শি; কার যাদুকর এ দু রাসুলে খোদ স্বাল্লা আন্দাইহ ওয়াসাল্লাম এর বক্ষের যাদু, অবশ্যই অবশ্যই আমি যা করি, কিন্তু হাবিব খােদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ হতে এটাকে যত নসাৎ করার চেষ্ট করা। হউক না কেন থামানাে যাবেনা। ইহা মুছে দেয়ার যতই চেষ্ট করা হউক সক্ষম হবে না। বরং দিন দিন এর আলাে আরাে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। পরিশেষে অনেক শত্রু হিংসুক সমালােচক বিরুদ্ধাচরণ কারীরা তাঁর পাক চরণে হাজির হয়ে ইহকাল ও পরকালের সহষলতা লাভ করলেন। যার ফলে এখনও পর্যন্ত তার ফয়েজ? বরকত যাহের-বাতেন নুরে বঙ্গরাজ্য হিন্দুস্থানে বাইরুন, রেঙ্গুন, বাম, আকিয়ব, করাচি, কান্দাহার, কাবুল, রাশিয়া ও বােখরা সহ অন্যান্য রাজ্যে তার আধ্যাত্মিক ক্ষমতার আলাে পৌছে গেল। 
হযরত খুলনী (রহ.) এর হিজরত : 
হযরত খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর প্রায়ই জজবা গালেব থাকিত, ইবাদতের মধ্যে একাগ্রহীনতায় স্বাদ না পাওয়াতে স্বগ্রামের অসহযােগিতার কারণে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত আদায়ের লক্ষ্যে এমন একটি জায়গার অনুসন্ধান করছিলেন যাতে মনের প্রশান্তি অর্জন করে আল্লাহ তায়ালার স্মরণে (জিকির) সর্বদা মাশগুল থাকা যাবে । পরিশেষে তাঁর এজন বিশ্বাসী নিষ্ঠাবান খাদেম মুহাম্মদ ওসমান সরদারের আবেদনে স্বীয় জন্ম ভূমি চাপড়া ছেড়ে গুনাকর কাটি নামক স্থানে স্বপরিবারে হিজরত করে উক্ত এলাকা ও
এলাকাবাসীকে ধন্য করেন। | 
বর্তমানে ঐ এলাকা হযরতের জাহের বাতেন নূরের দ্বারা নূরের ভূ-খন্ডে পরিণত হল। সন্দেহের জঙ্গল মানুষের মঙ্গল ও শানিতে পরিণত হল। তিনি তথায় মহান আল্লাহ তায়ালার । জিকির এবং আল্লাহর সৃষ্টির শিক্ষায় ও হেদায়তের মধ্যে মাশগুল রইলেন, তিনি শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন এমনিভাবে তিনি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত হিজরতকে ও ছেড়ে দেয়নি। 
সিলসিলা সমুহের দায়িত্ব ও বিভিন্ন তরিকতের খেলাফত : 

হযরত শাহসুফী কুতুবুল আকতাব পীরানে পীর হযরত গাউছুল আজম শাহ্ মাওলানা আবদুল আজিজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহির কাছে বিভিন্ন তরিকতের খেলাফত তাঁর প্রাণ প্রিয়। মুরশিদ হযরত গাউসে আজম শাহ আবুল-ফারুকী দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর নিকট হতে প্রাপ্ত হয়েছেন। তাতে তিনি নকশবন্দী তরিকতের মাধ্যমে বেশী লাভবান হয়ে ছিলেন বিধায় তিনি সকল মুরিদদেরকে নকশবন্দীয়া ও মােজাদ্দেদীয়া তরিকতের দীক্ষায় দীক্ষিত করতেন। তিনি যে সকল তরিকতের শিক্ষায় শিক্ষিত খেলাফত লাভে ধন্য হয়ে ছিলেন উক্ত তরিকা সমূহের শাজরা নিন্মে বরকত হাসিলের উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হল। 
সিলসিলায়ে নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিয়া :
 ১। হযরত মুহাম্মদ মােস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়া সাল্লাম। 
২। খলিফাতুর রাসুল হযরত আবু বকর ছিদ্দিক রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। 
৩। হযরত সালমান ফারসী রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ।
৪। হযরত ইমাম কাসেম রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৫। হযরত ইমাম জাফর সাদেক রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৬। হযরত সােলতানুল আরেফীন বায়েজীদ বােস্তামী রাহমতুল্লাহ আলাইহি। 
৭। হযরত আবুল হাসান খেরকানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৮। হযরত আবু আলী ফারেমদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৯। হযরত ইউসুফ হামদানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১০। হযরত আবদুল খালেক গজদওয়ানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১১। হযরত আরেফ রিওগরী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১২। হযরত মাহমুদ আনজীর ফাগনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৩। হযরত আজিজানে আলী রামাইতনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৪। হযরত মােহাম্মদ বাবা সামমাসী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৫। হযরত ছৈয়দ আমিরে কুলাল রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৬। ইমামুত তরীকত হযরত খাজা সৈয়্যদ বাহাউদ্দিন নকশবন্দী বােখারী মুশকিল কোশা রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৭। হযরত শাহ আলাউদ্দিন আত্তার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৮। হযরত ইয়াকুব চরখী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৯। হযরত ওবাইদুল্লাহ আহরার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২০। হযরত মােহাম্মদ যাহেদ অলি রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২১। হযরত দরবেশ মােহাম্মদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২২। হযরত খাজা আম কেনগী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৩। হযরত খাজা রদি উদ্দিন মােহাম্মদ বাকী বিল্লাহ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৪। হযরত ইমামুত তরিকত কাইয়ুমে দুনিয়া ইমামে রববানী মােজাদ্দেদে আলফেসানী শেখ আহমদ সেরহিন্দি ফারুকী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৫। হযরত মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৬। হযরত ছাইফুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৭। হযরত সৈয়্যদ নুর মােহাম্মদ বদায়ুনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৮। হযরত মির্যা জানে জানানে মাজহার দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৯। হযরত শাহ গােলাম আলী দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩০। হযরত শাহ আবু সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি।

৩১। হযরত শাহ আহমদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩২। হযরত শাহ মােহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৩। হযরত শাহ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৪। হযরত শাহ আবদুল আজীজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৫। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৬। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৬। হযরত শাহছুফি ছৈয়দ মাওলানা মােহাম্মদ ইসলাম শাহ চাটগামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 

সিলসিলায়ে কাদেরীয়া:
১। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া আলাইহি ওয়া ওয়াসাল্লাম 
২। হযরত আলী মরতুজা কররমাল্লাহু তায়ালা ওয়াজহাহুল করিম। 
৩। হযরত ইমাম হাসান মােজতবা রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু 
৪। হযরত ইমাম হােসাইন রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। 
৫। হযরত ইমাম জয়নুল আবেদীন রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু 
৬। হযরত মােহাম্মদ বাকের রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৭। হযরত জাফর সাদেক রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৮। হযরত মুসা কাজেম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১০। হযরত মারুফ কারখী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১১। হযরত সিররে সতী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১২। হযরত জোনাইদ বােগদাদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৩। হযরত আবু বকর শিবলী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৪। হযরত আবদুল ওয়াহেদ ইয়েমনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৫। হযরত আবুল ফরাহ ইউসুফ তরতুসী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৬। হযরত আবুল হাসান হাংকারী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৭। হযরত আবু সাইদ মাখজুমী রাহমতুল্লাহি আলাইহি | 
১৮। হযরত গওছুল আজম পীরানে পীর মাহবুবে ছােবহানী কুতুবে রব্বানী মহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৯। হযরত ছৈয়দ আবদুর রজ্জাক রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২০। হযরত ছৈয়দ শরফুদ্দিন কাতাল রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২১। হযরত ছৈয়দ আবদুল ওয়াহহাব রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২২। হযরত ছৈয়দ বাহাউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৩। হযরত ছৈয়দ আক্কিল রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৪। হযরত ছৈয়দ শামসুদ্দিন সাহরায়ী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৫। হযরত ছৈয়দ গদা রহমানে আউয়াল রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৬। হযরত ছৈয়দ শামসুদ্দিন আরেফ রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৭। হযরত ছৈয়দ গদা রহমান ছানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
 ২৮। হযরত ছৈয়দ ফুজাইন রাহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৯। হযরত শাহ কামাল কেতীলী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩০। হযরত শাহ সেকান্দর রাহমতুল্লাহি আলাইহি
৩১। হযরত শাহ ইমামুত তরিকত মােজাদ্দেদে আলফে সানী শেখ আহম্মদ সেরহিন্দি রাহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩২। হযরত শাহ মােহাম্মদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৩। হযরত শাহ আব্দুল আহাদ ওয়াহদত রাহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৪। হযরত শাহ আবেদ সােননামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৫। হযরত মির্জা জানে জানানে মােজহার রাহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩৬। হ্যর শাহ গােলাম আলী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৭। হযর শাহ আবু সাইদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৮। হযরত শাহ আহমদ সাইদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৯। হযরত শাহ মােহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪০। হযরত শাহ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪১। হযরত গউসে আযম শাহ মাওলানা আব্দুল আজিজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪২। হযরত শাহ্ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪৩। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪৪। হযরত শাহছুফি ছৈয়দ মাওলানা মােহাম্মদ ইসলাম শাহ্ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 

সিলসিলায়ে চিশতীয়া:
১। হযরত মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । 
২। হযরত আলী মরতুজা রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু। 
৩। হযরত হাসান বছরী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪। যহরত আবদুল ওয়াহেদ ইবনে যায়েদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি।
৫। হযরত ফোজাইল ইবনে আয়ায রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৬। হযরত ইবরাহিম ইবনে আদহাম রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৭। হযরত হােয়াইফা মরয়াশী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৮। হযরত হােবাইরা বছরী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৯। হযরত ইসহাক ইলুয়ু দাইনয়ারী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১০। হযরত আবু ইসহাক শামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১১। হযরত আবু আহমদ আবদাল চিশতী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১২। হযরত আবু মুহাম্মদ চিশতী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৩। হযরত আবু ইউসুফ চিশতী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৪। হযরত মৌদুদ চিশতী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৫। হযরত হাজী শরীফ জিন্দানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৬। হযরত খাজা ওসমান হারুনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৭। হযরত ইমামুত তরিকত আতায়ে রাসুল, বান্দা নেওয়াজ, গরীবে নেওয়াজ খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৮। হযরত কুতুবুদ্দিন বখতেয়ার কাকী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৯। হযরত খাজা ফরিদুদ্দিন গঞ্জে শেকর রাহমতুল্লাহি আলাইহি।
সিলসিলায়ে নেজামিয়া:
২০। হযরত খাজা সােলতানুল মশায়েখ নিজামুদ্দিন মাহবুবে এলাহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২১। হযরত নাছির উদ্দিন রওশন ছেরাগ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২২। হযরত ছৈয়দ জালালুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৩। হযরত ছৈয়দ আজমল বারায়েছী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৪। হযরত আবুল হাসান বারায়েছি রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৫। হযরত দরবেশ আওদেহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
সিলসিলায়ে ছাবেরীয়া :
২০। হযরত মাখদুম আলী ছাবের রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২১। হযরত শামসুদ্দিন তুরক রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২২। হযরত জালাল উদ্দীন পানিপথি রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৩। হযরত আব্দুল হক রওদলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৪। হযরত মুহাম্মদ আরেফ রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৫। হযরত আহম্মদ আরেফ রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৬। হযরত আব্দুস কুদ্দুস গাংগুহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৭। হযরত রুকনুদ্দিন রাহমতুল্লাহি রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৮। হযরত মাখদুল আব্দুল আহাদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি
২৯। হযরত শাহ ইমামুত তরিকত মােজাদ্দেদে আলফে সানী শেখ আহম্মদ সেরহিন্দি রাহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩০। হযরত শাহ মােহাম্মদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩১। হযরত শাহ আব্দুল আহাদ ওয়াহদত রাহমতুল্লাহি আলাইহি
৩২। হযরত শাহ আবেদ সােননামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৩। হযরত মির্জা জানে জানানে মােজহার রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৪। হযরত শাহ গােলাম আলী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৫। হযর শাহ আবু সাইদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৬। হযরত শাহ আহমদ সাইদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৭। হযরত শাহ মােহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৮। হযরত শাহ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৯। হযরত গউসে আযম শাহ মাওলানা আব্দুল আজিজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪০। হযরত শাহ্ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪১। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪২। হযরত শাহছুফি ছৈয়দ মাওলানা মােহাম্মদ ইসলাম শাহ্ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 

সিলসিলায়ে সোহরাওয়ার্দিয়া:
১। হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 
২। হযরত আলী মরতুজা রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু 
৩। হ্যরত হাসান বছরী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪। হযরত হৰিৰ আজমি রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৫। হযরত দাউদ হায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৬। হযরত মারুফ করখী রহমতুল্লাহি আলাইহি 
৭। হযরত সিরে সতী রহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৮। হযরত জোনাইদ বােগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি 
৯। হযরত মমশাদ দাইনুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি 
১০। হযরত আহমদ আসওয়াদ দাইনুরী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১১। হযরত মােহাম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১২। হযরত ইয়ার মােহাম্মদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৩। হযরত আবদুল্লাহ অমােবিয়া রাহমতুল্লাহ আলাইহি 
১৪ । আব্দুল কাহের সােহরাওয়ার্দী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৫। হযরত আবু নজীব সােহরাওয়ার্দী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৬। হযরত শিহাবুদ্দিন সােহরাওয়ার্দী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৭। হযরত বাহাউদ্দিন জাকারিয়া মোলতানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি 
১৮ । হাত ছিদরুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি
১৯ । হযরত ছৈয়দ জালালুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 

২০। হযরত আজমল বাহরাইছী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২১। হযরত মুজড়ান বাহরাইছা রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২২। হযরত দরবেশ আওদেহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৩। হযরত আব্দুল কুদ্ছ গাংগুহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৪। হযরত রুকনুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৫। হযরত মাখদুম আব্দুল আহাদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৬। হযরত ঈমামুল আউলিয়া শেখ আহমদ ফারুকী রাহমতুল্লাহি আলাইহি ২৭। 
হযরত মােহাম্মদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৮। হযরত আব্দুল আহাদ ওয়াহদত রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৯। হযরত মােহাম্মদ আবেদ সােন্নামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩০। হযরত মির্জা জানে জানানে মজহার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩১। হযরত শাহ গােলাম আলী দেহলবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩২। হযরত শাহ আবু সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৩। হযরত শাহ আহমদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৪। হযরত শাহ মােহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৫। হযরত আবুল খাইর আব্দুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৬। হযরত শাহ আব্দুল আজিজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৭। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রাহমতুল্লাহি আলাইহি ৩৮। হযরত শাহ্ মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৯। হযরত শাহছুফি ছৈয়দ মাওলানা মােহাম্মদ ইসলাম রাহমতুল্লাহি আলাইহি 

সিলসিলায়ে কোবরাভীয়া: 
১। হযরত মােহাম্মদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 
২। হযরত আলী মরতুজা রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু 
৩। হযরত হােসাইন রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু । 
৪। হযরত আলী জয়নুল আবেদীন রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু 
৫। হযরত মােহাম্মদ বাকের রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৬। হযরত জাফর সাদেক রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৭। হযরত মুসা কাজেম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৮। হযরত আলী রেজা রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৯। হযরত মারুফ করখী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১০। হযরত সিররে সকৃতী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১১। হযরত জোনাইদ বােগদাদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১২। হযরত আবু আলী রওদবারী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৩। হযরত আবু আলী কাতেব রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৪। হযরত আবু ওসমান মাগরেবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৫। হযরত আবুল কাশেম গােরগানী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৬। হযরত আবু বকর নচ্ছাজ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৭। হযরত আহমদ গজ্জালী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৮। হযরত আবু নজীব সােহরাওয়ার্দী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৯। হযরত আম্মার ইয়াসের রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২০। হযরত নজমুদ্দিন কোবরা রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২১। হযরত বাবা কামাল রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২২। হযরত আহমদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। হযরত আতাইয়া খালেদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৪। হযরত শামসুদ্দীন ফরগানী রহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৫। হযরত হামিদুদ্দীন সরকন্দা রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৬। হযরত সৈয়দ জালালুদ্দিন বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৭। হযরত সৈয়দ জালালুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৮। হযরত সৈয়দ আজমল বাহরাইছ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৯। হযরত বুড়ন বাহরাইছী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩০। হযরত দরবেশ আওদহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩১। হযরত আব্দুল কুদ্দছ গাংগুহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩২। হযরত রুকন উদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৩। হযরত মাখদুম আব্দুল আহাদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৪। হযরত ইমামুত তরিকত শেখ আহম্মদ সেরহিন্দ ফারুকী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৫। হযরত মােহাম্মদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৬। হযরত আব্দুল আহাদ ওয়াহদত রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৭। হযরত আবেদ সােননামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩৮। হযরত মির্জা জানে জানানে মজহার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩৯। হযরত শাহ গােলাম আলী দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪০। হযরত শাহ আবু সাইদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪১। হযরত শাহ আহমদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪২। হযরত মােহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪৩। হযরত শাহ আবুল খাইর আব্দুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪৪। হযরত শাহ আব্দুল আজিজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪৫। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪৬। হযরত শাহ্ মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৪৭। হযরত শাহ মাওলানা কাযী সৈয়্যদ মুহাম্মদ ইসলাম চাটগামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
সিলসিলায়ে মুদারিয়া:
 ১। ঈমামুল আম্বিয়া হযরত মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম 
২। হযরত ছৈয়্যদুনা আবু বকর ছিদ্দিক রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। 
৩। হযরত আবদুল্লাহ আলম বরদার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪। হযরত ইয়ামিন উদ্দিন শামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৫। হযরত আইনউদ্দিন শামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৬। হযরত তাইফুর শামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৭। হযরত বদরুদ্দিন শাহ মুদার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৮। হযরত ছৈয়দ আজমল বহরায়ছী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৯। হযরত বুড়ন বাহরায়ছী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১০। হযরত দরবেশ আওদহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১১। হযরত আব্দুল কুদ্ছ গাংগুহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১২। হযরত রুকন উদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৩। হযরত মাখদুম আব্দুল আহাদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৪। ঈমামুত তরিকত কাইয়ুমে দুনিয়া মাহবুবে ছৈয়দুল আম্বিয়া হযরত শাহ মােজাদ্দেদে আলফেসানী শেখ আহমদ সেরহিন্দি ফারুক হাসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৫। হযরত মুহাম্মদ সাঈদ শাহাতুল্লাহি আলাইহি 
১৬। হযরত আব্দুল আহাদ ওয়াহিদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি 
১৭। হযরত মুহাম্মদ খালেদ সুন্নামী রহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৮। হযরত মির্জা জানে জানানে মাজহার হতাহি আলাইহি 
১৯। হযরত শাহ গোলাম আলী পাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২) হযরত শাহ আবু সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২১। হযরত শাহ আহমদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২২। হযরত শাহ্ মুহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
২৩। হযরত শাহ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুয়াহি আলাইহি ২৪। হযরত শাহ্ মাওলানা আব্দুল আজিজ খুলনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ২৫। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহীম খুলনী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৬। হযরত শাহ মাওলানা মাসুম খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৭। হযরত শাহ মাওলানা কাযী সৈয়্যদ মুহাম্মদ ইসলাম চাটগামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 

সিলসিলায়ে কালন্দরীয়া 
১। হযরত ছৈয়দুল মােরছালিন আহমদ মােস্তফা মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম 
২। হযরত আব্দুল আজিজ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৩। হযরত খিজর রােমী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৪। হযরত নজমুদ্দিন কালন্দর রাহমতুল্লাহি আলাইহি
৫। হযরত কুতুব উদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৬। হযরত মুহাম্মদ শাহ্ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৭। হযরত শাহ্ আবদুছ ছালাম রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৮। যহরত শাহ্ আব্দুল কুদ্ছ গাংগুহী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
৯। হযরত রুকন উদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১০। হযরত মাখদুম আব্দুল আহাদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১১। হযরত ইমামুত তরিকত কাইয়ুমে দুনিয়া শেখ আহমদ ছেরহিন্দি ফারুকী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১২। হযরত মােহাম্মদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৩। হযরত আব্দুল আহাদ ওয়াহদত রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৪। হযরত আবেদ সুন্নামী রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৫। হযরত মির্জা জনে জানানে মাজহার রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৬। হযরত শাহ গােলাম আলী দেহলভী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৭। হযরত শাহ্ আবু সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
১৮। হযরত শাহ্ আহমদ সাঈদ রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
১৯। হযরত শাহ্ মুহাম্মদ ওমর রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২০। হযরত শাহ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ মহিউদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি। ২১। গউসে জমান হযরত শাহ আবদুল আজিজ খুলনবী রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২২। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ আবদুর রহিম রাহমতুল্লাহি আলাইহি। ২৩। হযরত শাহ মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম রাহমতুল্লাহি আলাইহি 
২৪। হযরত শাহ্ মাওলানা কাযী সৈয়্যদ মােহাম্মদ ইসলাম ধর্মপুরী রাহমতুল্লাহি আলাইহি।


গাউসে খুলনার খলিফাবৃন্দ:
মৌলিক ভাবে হয়ত গউসুল আযম শাহ মাওলানা আব্দুল  আজিজ খুলনবী রহমতুল্লাহি আলাইহির প্রত্যেক মুরিদানের কলে জারি ছিল। এরপর ও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন জায়গায় মানব-দানব কে আল্লাহ ও রাসুলের পথে আহ্বান করার জন্য নিম্ন লিখিত ব্যক্তিবর্গকে খেলাফত দান করেন। 
১। পীরে কামেল কুতুবুল আউলিয়া হযরত শাহছুফী মাওলানা মােহাম্মদ আব্দুর রহিম শাহ খুলনবী নকশবন্দী মােজাদ্দেদী  রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
2। পীরে কামেল কুতুবুল আউলিয়া হযরত শাহছুফী মাওলানা মােহাম্মদ মাসুম শাহ খুলনবী নকশবন্দী মােজাদ্দেদী  রাহমতুল্লাহি আলাইহি। 
৩। পীরে কামেল রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরিকত হাদিয়ে দীন ও মিল্লাত ছুফিয়ে জমান আশেকে রাসুল ফানা ফিশ শাইখ ফানাফির রাসুল (দ,) হযরত শাহ মাওলানা কাযী সৈয়্যদ মােহাম্মদ ইসলাম শাহ চাটগামী ধর্মপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। 
তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তরিকতের কাজ চালিয়ে যান, বর্তমানে তার সুযােগ্য শাহজাদা শব্বিরে জমান রাইহানুদুনিয়া হযরত শাহ মাওলানা কাযী সৈয়্যদ মােহাম্মদ আবদুশ শকুর রায়হান অযিযী নকশবন্দী মােজাদ্দেদী (মঃ জিঃ আঃ) তাঁর প্রতিনিধিত্ব করে দ্বীন ও তরিকতের প্রচুর আনজাম দিচ্ছেন। 
৪। হযরত মাওলানা শাহসুফি ছৈয়্যদ মাহমুদ হাসান রেজবী নকশবন্দী মােজাদ্দেদী রাহমতুল্লাহি আলাইহি (করাচী, পাকিস্তান)।
৫। হযরত মাওলানা মােহাম্মদ আলিমুদ্দিন শাহ্ রাহমতুল্লাহি  আলাইহি (মুর্শিদাবাদ, ভারত ।)
৬। পীরে কামেল আল্লামা মােহাম্মদ আবদুশ শকুর শাহ সাহেব রাহমতুল্লাহি আলাইহি (মিওরখীল , আকইয়াব, বার্মা) 
৭। হযরত মাওলানা মােহাম্মদ নঈম উদ্দিন সাহেব রাহমতুল্লাহি আলাইহি (এলাহাবাদ, ভারত)
৮। শাহছুফি হযরত মাওলানা মােহাম্মদ মােখলেছুর রহমান শাহ রাহমুতুল্লাহি আলাইহি (সাদামা, আকিয়াব, বার্মা) 
হযরত গাউসুল আযম খুলনবীর (রহঃ) ইন্তেকাল:
 হযরতের মৃত্যুর একবৎসর পূর্বে বিষন্নতা অবস্থায় মসজিদে জোহরের নামাজ শেষান্তে বসে স্বীয় খাদেমগণ যথাক্রমে হাজী ছৈয়দ মাহমুদুল হাছান (রহ.), হাজ্বী সৈয়দ আকবর হােছাইন (রহ.), হযরত মাওলানা মােহাম্মদ ইসলাম শাহ চাটগামী নকশবন্দী (রহ.), ও ছৈয়দ মােজহার আলী সাহেব (রহ.) কে সম্বােধন করে নিজের দিল্লী ও সেরহিন্দ শরীফের শেষ সফরের অবস্থা বর্ণনা করেন যে, আলােচনা সাপেক্ষে তিনি বললেন দিল্লী খানকাহ শরীফে যখন আব্দুল বাকী সাহেব ইনি ঐ আব্দুল বাকী | যার আলােচনা পূর্বে এসেছে আমার সাক্ষাতে আসেন এবং " তিনি বলে উঠেন আল্লাহ তায়ালা আপনার হায়াতকে এক বৎসর বৃদ্ধি করে দিলেন। তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিতের দ্বারা ভবিষ্যৎ বাণী দিলেন যে তিনি আর মাত্র বৎসর জীবিত থাকবেন। যাতে বুদ্ধিমান লােকেরা বুঝে নিল।

পরবর্তীতে এ কথা বলতে বাতেনী বিষয়ে অবগত ব্যক্তিদেরকে অবগত করার জন্য মুখস্ত একটি ঘটনা বর্ণনা করে সু-কৌশলে এড়িয়ে গেলেন। বলিলেন বাদশাহ শাহজাহান যখন দুর্বল হয়ে গেল। তখন তিনি কাইয়ুম ছানী উরওয়াতুল উছকা হযরত খাজা মােহাম্মদ মাসুম (রহ.) এর খেদমতে আবেদন জানাল যে আমি দুর্বল বৃদ্ধ জনিত কারণে খানকাহ শরীফে আস্তানায়ে আলিয়ায় উপস্থিত হতে সম্পূর্ণ অক্ষম। যদি আপনি মেহেরবানী করে আপনার এমন একজন খাদেম পাঠাবেন যার সংস্পর্শে বসে আমি স্থায়ী সফলতা অর্জন করব। তা আমার জন্য অত্যন্ত মঙ্গল হবে । হযরত কাইয়ুম ছানী (রহ.) তার আবেদন গ্রহন পূর্বক স্বীয় শাহজাদা খাজা মােহাম্মদ সাইফুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি কে দিল্লীতে পাঠালেন। সে সময়ে তার বয়স ছিল নয় বছর । বাদশাহ শাহজাহান খাজা হযরত সাইফুদ্দিন রাহমতুল্লাহি আলাইহি এর ছােহবত প্রাপ্ত হয়ে তার খেদমতে লিখে দিলেন যে, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ আপনার শাহজাদা (ম.জি.আ.) থেকে এমন স্বাদ মেহেরবানী ফয়েজ ও বরকত পাচ্ছি। যা আপনার ছােহবতের মধ্যে পাইতাম । এ কথাগুলি উপস্থিত খাদেম গণের অন্তর ভেঙ্গে গেল। সকলে মুখে কিছু বলার জন্য আগ্রহের ভাব প্রকাশ পেল। এরা কথা বলতে না বলতে তিনি অতি তাড়াতাড়ি উঠে বাড়ীর ভিতরে তাশরীফ নিলেন। হযরত খুলনবীর রাহমতুল্লাহি আলাইহি করাচি নিবাসী খলিফা সৈয়দ মাহমুদুল হাসান রেজবী নকশবন্দী বলেন যখন আমরা এসে বসলাম সৈয়দ মােজহার আলী করাচি রাহমতুল্লাহি আলাইহি এসে বললেন মৌলভী সাহেব! হুজুর মােবারক কি বললেন? আমার বুঝে আসতেছেনা। দয়া করে আমাকে বুঝিয়ে দিন।

ঐ অবস্থায় আমার অত্যন্ত পেরেশান ছিল (আল্লাহ ক্ষমা করুন) আমি অত্যন্ত ভরাক্রান্ত হৃদয়ে কর্কশ ভাষায় বললাম কি জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ? কোন সুসংবাদ হলে তাে বুঝতাম | এখন তাে অন্তর ভারাক্রান্ত অবস্থায় ফেটে যাচ্ছে। আর তুমি এসেছ উহা বুঝার জন্য ও জিজ্ঞাসা করার জন্য। ঐ বৎসর রবিউল আউয়াল মাসে সফরের আশায় করাচীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। কিন্তু খুলনা পৌঁছে করাচি রওয়ানা | হওয়ার একদিন পূর্ব তাঁর স্বভাব ও শরীর এর অবস্থা একটু অবনতি দেখা দিল। তার এমন অবস্থা হল দর্শনার্থী বর্ণনা করলেন, যে, হুজুর মােবারক মনে হয় বেহুশ ! কিন্তু বড় বড় অভিজ্ঞ হেকীম ও শ্রেষ্ট ডাক্তার গুণ দেখার পর হতভম্ব হয়ে বলে আমরা এখন ও পর্যন্ত এ রকম শক্তিশালী হৃদয় সম্পন্ন মানুষ দেখিনি। তার বাহ্যিক অবস্থা দেখলে মনে হয় বেহুশ। কিন্তু মৌলিকভাবে সুস্থ স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিকেও এরকম ভাল দেখা যায়নি। তাঁর রােগ কি তা আমাদের ধারণা ও অনুমানের বাইরে। এ অবস্থায় থাকতে থাকতে তিনি একদিন রবিউল | আউয়াল শরীফের বার (১২) তারিখে উচ্চ স্বরে বলেন “লাব্বাইকা ইয়া রফিকাল আলা, লাব্বাইক ইয়া রফিকাল জুলা”। অর্থাৎ “ হে শ্রেষ্ঠ বন্ধু আপনার বান্দা আপনার দরবারে হাজিরা ইহা শুনা মাত্র উপস্থিত সকলের উপর হঠাৎ যেন কিয়ামতের অবস্থা হল। সকল খাদেম ভক্তগণ ও আশে পাশে কান্নাকাটি করে প্রভুর দরবারে ফরিয়াদ জানালেন।

আল্লাহু স্বীয় বিশেষ করুনা মেহেরবানীতে মুকবুল বান্দাদের দোয়া কবুল করেন। তার স্বাস্থ্য আস্তে আস্তে একটু উন্নতি দেখা দিল আল্লাহর রহমতে কিছু দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ করলেন। এক বৎসর পর্যন্ত সুস্থা ছিলেন। তিনি সেই সুস্থাতার সময় দুনিয়ার কোন কাজ কর্ম করেননি। যে কেহ বাইয়াতের উদ্দেশ্য আসতেন তার বড় সাহেবজাদা হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহিম (রহ.) এর কাছে সোপর্দ করতেন। তিনি একদিন সামান্য সুস্থ অবস্থায় এরশাদ করলেন যে, মহান আল্লাহ আমাকে তালাশ করছেন। আমি তার আহবানে, “লাব্বইক” ও বলে ছিলাম কিন্তু স্বীয় ছাহেবজাদাকে সম্বোধন করে বলিলেন এরা কান্নাকাটি করে এমন হওয়া থেকৈ বাধা দিল। আমাকে দেখার জন্য কেরে দিলেন। তোমরা ভালভাবে দেখে নাও আমার এখন থেকে থেকে চলে যাওয়া অনেক ভাল হবে। আর আল্লাহর বান্দাদের হকে মধ্যে আমার থাকাটাও উত্তম হবে। পরিশেষে ১ বৎসর সুস্থ থারা পরবর্তীতে সফর মাসে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হলেন। উক্ত জ্ব দিন দিন বাড়তে লাগল প্রভুর সাক্ষাৎ দিন ঘনিয়ে এল ১৯৫৬ খ্রি. ১৩৬২ বাংলা ২৯ শে আশ্বিন, ১১ রবিউল আউয়াল শরীফে সকাল ১০টায় কোটি কোটি ভক্ত আশেকদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে প্রভুর সাড়া দিয়ে এ গাওছিয়াতের চন্দ্র বেলায়তের সূর্য রহমতে ইলাহিতে ডুব দিলেন। ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন। তাঁর বেছালের পর খুব জোরে ঝড় তুফান হল চুতর্দিকে অন্ধকার আকাশ বাতাসে শোকের ধ্বনি বাজতে লাগল সে দিন থেকে পর দিন সকাল আট ঘটিকা পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টি হল। কিন্তু জানাযার নামাযের এক ঘন্টা আগে বন্ধ হয়ে গেল অতি সুন্দর ভাবে ভক্ত আশেকানদের দিয়ে জানাযার নামায ও দাফনের কার্য সম্পূর্ণ হল।


* লেখক:
উপাধ্যক্ষ, রসুলাবাদ ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি)মাদ্রাসা।

No comments

Powered by Blogger.