দরবারের পরিচিতি

 



রাহমাতুল্লিহ আলামীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সরকারে দো’আলাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রকৃত  প্রতিনিধি হিসেবে অসাধারণ আধ্যত্মিক শক্তির অধিকারী হয়ে বাতিলের অপশক্তিকে দূরীভ’ত করে যাঁরা সফলতার উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত, আল্লাহ তা’আলাও তাঁর প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাশ্বত দ্বীন ও নিরূপম আদর্শকে সামগ্রিক জীবনের প্রতিটির স্তরে প্রতিষ্ঠিত করত, ত্বরীকত, মারেফত, হাকীতের ও প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতকে যথাযথভাবে স্বচ্ছ অবয়বকে খোদার সৃষ্টি জগতে সমুন্নত করে যাঁরা অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ও চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আওলাদে রাসুল, মুর্শিদে বরহক্ব, ধর্মপুর দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক শরাফতের মহান প্রতিষ্ঠাতা, পীরে কামেলে মকুাম্মেল কুতুবুল আলম হযরতুলহাজ্ব আল্লামা কাজী সৈয়দ মুহাম্মদ ইসলাম  শাহ চাটগামী নকশবন্দী মুজাদ্দেদী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি অন্যতম।

তিনি সিলসিলায়ে আলিয়া নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদিনয়ার মহান শায়খ অলিয়ে কামেল, গউসে যমান, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠতম দ্বীনের কান্ডারী রূহানী শক্তির আধার, গাউসিয়তের অন্যতম ধারক বাহক গাউসুল আযম হযরত আবদুল আযীয খুলনবী নকশবন্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি মোবারক হাত হতে ১৯৫৫ সালে খেলাফত লাভ করে স্বীয় মুর্শিদের আদর্শকে আপন জীবনে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য অবিরাম সাধনা ও কঠোরভাবে পীরের ধ্যানে বিভোর হয়ে, মোরাকাবা মোশাহাদার  মাধ্যমে কিনারাহীন আধ্যত্মিক সাগর বিচরণ করতে করতে বেলায়তের উচ্চ আসনে সমাসীন হন। 

যাঁর সমগ্র জীবনকর্ম ইসলামের মূল¯্রােতেধারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত ও সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত ছিল।  যার কর্মময় জীবনের ব্যাপ্তি মানব ইতিহাসকে সমৃদ্ধ, যিনি দীপ্তময় ইতিহাসের ¯্রষ্টা বিংশ শতাব্দীর এমন এক ক্ষণজন্মা আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব হযরত আল্লামা ইসলাম শাহ চাটগামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

এই অসাধারণ বেলায়তের অধিকারী, প্রখ্যাত আলেম কামেল আল্লামা ইসলাম শাহ চাটগামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি হকপন্থী মতাদর্শীদেরকে তাঁদের সমুখস্থ পথ বিজয়ের সুপ্রশস্থ পথে নির্ভয়ে অগ্রসর হওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করতেন। কারণ তিনি ছিলেন একজন অলিয়ে কামেল ও আহলে সুন্নাত ওয়ালজামাতের নির্ভীক দিশারী।

 এ কারণে তাঁর মুরীদগণ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের  উপর এমন ভাবে অটল থাকত যে, সমকালীন যে কোন বাধা-বিপত্তি ভয়, ভীতি ও প্রতিকুলতা তাদেরকে আদর্শচ্যুত করতে পারেনিও পারছেনা। সর্বোপরি পূর্বের সকল অপকর্ম বদ আকিদা থেকে নিষ্টাপূর্ণভাবে তাওবা করে তারা একেকজন প্রকৃত দ্বীনদার মুমিন মুসলমান পরিণত হওয়ার কঠিন সাধনায় সচেষ্ট হন। যারফল শ্রæতিতে আল্লামা ইসলাম শাহ চাটগামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি মুরিদগণ তাঁর সাথে জামাতসহকারে নামায আদায়, তরীকতের অযিফা আদায়কালে ও উঠা বসায় আল্লাহ ও রাসুলের প্রেমে উদ্ভাসিত হয়ে সদা-সর্বদা কান্নাকাটি ও হাক ডাকে সময় অতিবাহিত করত।

হুজুর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসলাম শাহ চাটগামী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আল্লাহর সৃষ্টিকে তার বরকতময় ও ফযিলতপূর্ণ সান্নিধ্য দানে কখনো কার্পণ্যতা দেখাননি। অত্যান্ত পরিশ্রম ও কষ্টের বিনিময়ে ও তিনি আল্লাহার বান্দাদেরকে তিনি ত্বরিকতের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় দেয়ার জন্য সাধ্যাতীত প্রচেষ্টা চালাতেন। আল্লাহর বান্দাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঠিক পথ তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পতাকাতলে স্থান করে দিয়ে ঈমান আক্বীদাহ মজবুত করা নিমিত্তে নিরলসভাবে পরিশ্রম করতেন। আর রূহানী শক্তির বলে আপন মুরীদগণকে ইমামুত ত্বরীক্বতে হযরত বাহাউদ্দীন নকশবন্দী মুশকিল কোশা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, ইমামে রব্বানী মুজাদ্দেদ আলফেসানি হযরত শায়খ আহমদ সেরহিন্দ রাহমাতুল্লাহির আলাইহি বেলায়ত শক্তির বলে বলিয়ান হয়ে যখন তাওয়াজ্জহও করতেন তখন মুরীদগণের কলব জিন্দা হতে শরীরের লোমে লোমে পর্যন্ত আল্লাহ আল্লাহ যিকির করতো। যে ফয়েজ বরকতের মাধ্যমে শুধু মুসলমান নয়,  বিধর্মীরা পর্যন্ত প্রেমে মশগুল হয়ে  ঈমান সহকারে কলব জিন্দা হয়ে প্রতি লোমে লোমে আল্লাহ আল্লাহ যিকির করতো।

তিনি হযরত গাউসুল আযম খুলনবী রহমাতুল্লাহি আল্লাইহির প্রতিনিধি হয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার জমিনে ধর্মপুর ফকিরপাড়ায় কুরআন-সুন্নাহ্ সম্মত রূহানী ও আধ্যাত্মিক চর্চার অপূর্ব ঠিকানা সৃষ্টি করেন যা আজ যারা দেশে স্বনামধন্য হক্কানী রব্বানী সুন্নী ওলামায়ে কেরামের প্রচারিত হচ্ছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সেই প্রখ্যাত ও শ্রেষ্ট আদবের দরবার ধর্মপুর দরবার শরীফ। তারপর বর্তমান সাজ্জাদানশীল আমাদের প্রাণ প্রিয় পীরও মুর্শিদ হযরতুলহাজ্ব আল্লামা কাজী সৈয়দ মুহাম্মদ আবদুশ শাকুর রায়হান আযিযী নকশবন্দী মুজাদ্দেদী (মু.জি.আ.)।

চট্টগ্রামের যমীনে নকশবন্দিয়া মুজাদ্দেদীয়া তরীকতের এই মহান মিলন মেলার নাম ওরশ শরীফ। এর মাধ্যমে আধ্যাত্মিক পথের যাত্রীরা আধ্যাত্মিক রূহানী ফয়েজ ও নেয়ামত লাভ করে নিজেদের ভাগ্য পরির্তন করে থাকেন। ১৯৫৯সালে ২৯আশ্বিন হযরত গাউসুল আযম খুলনবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির ওরশের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীকালে ঝড় বৃষ্টির কারণে ২৯ কার্তিক ওরশের তারিখ পরিবর্তন করা হয়। সে সময় থেকে আজ পযন্ত অত্যন্ত মহাসমারোহে হাজার হাজার আশেকে রাসুল ও আশেকে অলিদের সমাগম গয়ে আসছে। ওরশ শরীফ প্রতিষ্ঠার পর ১৮বছর পর্যন্ত খুলনা দরবার শরীফের মহান শায়খ সুলতান আউলিয়া হযরত শাহ্ আবদুর রহীম খুলনবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার  ইন্তেকালের পর ইমামুল আউলিয়া হযরত শাহ মাছুম খুলনবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর ছদারতে ১৯৯৭ ইংরেজি পর্যন্ত এ দরবারে ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তারপর হতে দরবার শরীফের বর্তমান সাজ্জাদানশীল আমার প্রাণ প্রিয় মুশিদ মুর্শিদে রবহক হযরতুলহাজ্ব আল্লামা আযিযী সৈয়দ মুহাম্মদ আবদুশ শাকুর রায়হান আযিযী নকশবন্দী মুজাদ্দেদী (ম.জি.আ) অত্যন্ত শানদার ও ভাবগাম্বীর্যপূর্ণ ভাবে কুরআন সুন্নাহর আলোকে ওনারই পবিত্র ওরশ শরীফ ও ফাতেহা শরীফের কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালনা করে যাচ্ছেন। আল্লাহ তা’আলা তাঁর পবিত্র হায়াতে অফুরন্ত বরকত দান করুন। আমিন!

-মুহাম্মদ ফরেদৌস


No comments

Powered by Blogger.