হযরত শায়খ্ বাইয়াযীদ বোস্তামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি

শাহরুদ এর কাছে বায়েজিদ বোস্তামির মাজার অবস্থিত।


বায়েজিদ বোস্তামি (ফার্সি بايزيد بسطامى ) একজন বিখ্যাত ইরানী সূফী সাধক। তিনি আবু ইয়াজিদ বিস্তামি, তায়ফুর আবু ইয়াজিদ আল-বোস্তামি অথবা সুলতান-উল-আরেফিন (৮০৪-৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দ)[২] নামেও পরিচিত। তার জন্ম ইরানের বোস্তাম শহরে।

বায়োজিদ বোস্তামি
Tomb Shahrood.jpg
জন্ম৮০৪
মৃত্যু৮৭৪[১]
অঞ্চলপশ্চিম এশিয়া
ধারাসূফীবাদ
আগ্রহঅতীন্দ্রিয়বাদদর্শনসর্বেশ্বরবাদ
অবদানওয়াহদাত আল উজুদ

জীবনী

বোস্তামী নামের অর্থ - যিনি বোস্তাম শহরের বাসিন্দা। হযরত বায়েজিদের দাদা একজন পার্সী ধমাবলম্বী ছিলেন, যিনি পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার দাদার তিন ছেলে ছিল, তারা হলেন - আদম, তায়ফুর এবং আলী। তারা সকলেই কঠোর তপস্বী ছিলেন। তায়ফুর এর ছেলে হলেন বায়েজিদ। তার শৈশব সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না, তবে বেশি ভাগ সময়ই তিনি নিজ বাড়ির নিভৃতে অথবা মসজিতে কাটিয়েছেন। নিভৃতচারী হওয়া সত্ত্বেও সূফী জগৎ থেকে তিনি কখনোই আলাদা থাকেননি। সূফীবাদের আলোচনা করার জন্য তিনি লোকজনকে নিজের বাড়িতে আমন্ত্রন করতেন। বায়েজিদ কঠোর তপশ্চর্যা করতেন এবং সৃষ্টির্কতার সান্নিধ্য লাভের আশায় দুনিয়ার সকল আনন্দ-ফুর্তি থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। অবশেষে এটি বায়েজিদকে আত্নবিলয় - এর অবস্হায় নিয়ে যায়; সূফীবাদের মতে, শুধুমাত্র এ অবস্থাতেই একজন মানুষ সৃষ্টিকর্তার নৈকট্যলাভের কাছাকাছি পর্যায়ে যেতে পারে। বায়েজিদই প্রথম উন্মত্ত সূফী হিসাবে পরিচিতি পান, কেননা তিনি সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিজের অনুভূতিগুলো খোলাখুলি প্রকাশ করতেন (শাতাহাত, English: shatahat )। বায়েজিদকে একজন অন্যতম প্রভাবশালী অলৌকিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু তিনি তার সময়ে বেশ বিতর্কিতও ছিলেন।

মা ভক্তি

উল্লেখ আছে যে একদা বায়জীদ বোস্তমির মা অসুস্থ ছিলেন। এক রাতে মা বায়জীদ বোস্তমিকে পানি পান করবার জন্য পানি আনতে বলেন। বায়জীদ ঘরে পানি না পেয়ে অন্ধকার রাতে নদী থেকে পানি নিয়ে আসেন। এসে দেখলেন মা ঘুমিয়ে আছেন। তিনি ভাবলেন মাকে জাগালে মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যাবে, তাই তিনি পানি হাতে দাড়িয়ে থাকলেন। সকালে মায়ের ঘুম ভাঙার পর দেখলেন তার ছেলে পানি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে ।তিনি অবাক হলেন, খুশি হলেন।মা প্রান ভরে ছেলের জন্য দুয়া করেন। আল্লাহ মায়ের দুয়া কবুল করলেন। পরে পৃথিবী খ্যাত ওলি বায়েজিদ বোস্তামি নামে পরিচিত হলেন। এটা ইসলামের নৈতিক মূল্যবোধের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
== উন্মত্ত সূফী সুফী হিসেবে তার খ্যাতি ছিলো পুরো বিশ্বেই, কিন্তু তিনি মুসলিম বিশ্বে বেশি প্রভাব বিস্তার করেন বিশেষ করে শিয়া অধুিষিত ইরানে ==

বাংলাদেশে অবস্থিত বায়েজিদ বোস্তামির মাজার

বাংলাদেশের চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ সেনানিবাসের নিকটবর্তী একটি দরগাহ "বায়েজিদ বোস্তামির মাজার" হিসেবে প্রসিদ্ধ। কিন্তু বায়েজিদ বোস্তামি নামের কোন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব কখনো বাংলাদেশে এসেছে, এমন ইতিহাস নেই। চট্টগ্রামে তার নামে পরিচিত মাজারটি হচ্ছে একটি প্রতিকৃতি বা অনুকৃতি মাত্র। তবে অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন যে, বায়েজিদ বোস্তামি বাংলাদেশে আগমন করেছিলেন। খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর দিকে আরব বনিকরা চট্টগ্রাম উপকূলে আসা যাওয়া করত। সুতরাং নবম শতাব্দীতে বায়েজিদ বোস্তামির চট্টগ্রামে আগমন অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু এটি একটি ধারণা মাত্র। এর স্বপক্ষে এখন পর্যন্ত কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় নি।[৪]

উপদেশ

  • আল্লাহর প্রতিটি কাজ পছন্দনীয় এবং সন্তোষজনক। তিনি যদি কোন মানুষকে অবনতি ও দুর্তির চরমসীমায় পৌঁছে দেন, তবুও তা পরম পূলকে বরণ করা চাই।
  • যে নিজেকে আরিফ বলে, সে মূর্। যে নিজেকে মূর্ বলে ঘোষণা করে, সে আরিফ বটে।
  • আল্লাহ যাকে যোগ্য ও উপযুক্ত মনে করেন, তার পেছনে এক ফেরাউন লাগিয়ে দেন।

No comments

Powered by Blogger.